জুমবাংলা ডেস্ক : পায়ে বাঁধা শিকল, শিকলে বাঁধা অবস্থায় খেতেন খাবার। পায়ে লাগানো শিকল তালা মেরে বেঁধে দেওয়া হয় ইটভাটার ম্যানেজারের কক্ষের পিলারে। সারাদিন কাজ করানোর পর রাতে বেঁধে রাখা হতো। একরাত-দুরাত নয়, টানা চারটি রাত ইটভাটায় বেঁধে রাখার পর গত ০৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে মো. সবুজ আলী (৩৬)-কে উদ্ধার করে পুলিশ।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের তরফ পাচাইল গ্রামের আব্দুল গণি ব্রিকসে এ ঘটনা ঘটে।
শিকলে বাঁধা সবুজ আলীকে ম্যানেজারের কক্ষ থেকে উদ্ধার করেন ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. জুয়েল রানা। এঘটনায় ইটভাটার মালিকসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, উপজেলার তরফ পাচাইল গ্রামে অবস্থিত এজিবি (আব্দুল গণি ব্রিকস) নামে ইটভাটায় গত প্রায় দুই মাস ধরে কাজ করছিলেন সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার সাম্ভান গ্রামের মো. আবজাল হোসেনের (৫৪) ছেলে সবুজ আলী। কাজ রেখে পালিয়ে চলে যাবেন- এ সন্দেহে ওই শ্রমিককে পায়ে শিকল বেঁধে কাজ করাতেন ভাটার মালিক। দিনে কাজ করানোর পর রাতে মালিকের কক্ষে একটি পিলারের সাথে বেঁধে রেখে চালানো হতো নির্যাতন।
এঘটনা জানতে পেরে সবুজের বাবা আবজাল হোসেন থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ গত শুক্রবার রাতে শিকলে বাঁধা শ্রমিককে উদ্ধার ও ভাটার মালিক এবং ম্যানেজারকে গ্রেপ্তার করে।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত প্রায় দুই মাস আগে নাটোরের হালশা এলাকার ইটভাটার সর্দার আনসার আলী নামে এক ব্যক্তি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার এজিবি ব্রিকস নামের ইটভাটার মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম ৩ লাখ টাকা নিয়ে সবুজ আলীসহ মোট ১৮ জন শ্রমিক দেন। পরে তিনি লাপাত্তা হয়ে গেলে অন্য শ্রমিকরা বুঝতে পেরে তারাও চলে যায়। থেকে যায় সবুজ আলী। এ অবস্থায় পারিশ্রমিক না পেয়ে তিনিও চলে যেতে চাইলে ব্রিকসের মালিক ও ম্যানেজার ঘটনা বুঝতে পেয়ে পালিয়ে যেতে পারে সন্দেহে তাকে গত ০৫ ফেব্রুয়ারি পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রেখেই কাজ করাতেন। সেই সাথে চলত নির্যাতন।
এ অবস্থায় কৌশলে সবুজ আলী একটি মোবাইল দিয়ে ঘটনাটি বাবা আবজাল হোসেনকে জানান। পরে গত শুক্রবার রাতে আবজাল হোসেন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ ইটভাটায় গিয়ে শ্রমিক সবুজ আলীকে ইটভাটার মালিকের কক্ষ থেকে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এসময় ভাটায় অবস্থান করা ভাটার মালিক খাইরুল আলম রাসেল (৪২) ও ম্যানেজার আসাদ মিয়া (৭০)-কে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদ আহম্মেদ জানান, এঘটনায় তিনজনকে অভিযুক্ত করে নিয়মিত মামলা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।