বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : প্রযুক্তির এই যুগে সব কিছুই ডিভাইস নির্ভর। ছোট ছোট কাজের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও বড় কাজের জন্য কম্পিউটার বা ল্যাপটপের প্রয়োজন পড়ে। যদিও বর্তমানে ল্যাপটপেরই চল বেশি। ডেস্কটপ গেমার বা ভিডিও এডিটররাই বেশি ব্যবহার করেন।
তবে অফিসের কাজ, অনলাইন ক্লাস, গেমিং এমনকি ভিডিও এডিটিংয়ের জন্যও আজকাল ল্যাপটপ ব্যবহার করতে দেখা যায়।
ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কেনার সময় কিছু বিষয় মাথায় না রাখলে পরে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। চলুন, ল্যাপটপ কেনার সময় কী কী স্পেসিফিকেশন দেখা উচিত এবং কোন পেশার জন্য কেমন ল্যাপটপ উপযুক্ত সেটাও দেখে নেওয়া যাক।
১. প্রসেসর (CPU)
প্রসেসর হলো ল্যাপটপের মস্তিষ্ক।
এটি যত শক্তিশালী হবে, ল্যাপটপ তত দ্রুত কাজ করবে।
সাধারণ কাজের জন্য: আপনি যদি শুধু ওয়েব ব্রাউজিং, ভিডিও দেখা, ওয়ার্ড ফাইল সম্পাদনা ইত্যাদি করেন, তাহলে Intel Core i3 বা AMD Ryzen 3 যথেষ্ট।
অফিস ও মাল্টিটাস্কিং : একাধিক সফটওয়্যার একসঙ্গে চালাতে হলে Intel Core i5 বা Ryzen 5 বেছে নেওয়া ভালো।
গেমিং ও ভিডিও এডিটিং : হাই-এন্ড গেম বা 4K ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য Intel Core i7/9 বা Ryzen 7/9 প্রয়োজন।
২. র্যাম
র্যান্ডম অ্যাক্সেস মেমোরি (র্যাম) আপনার ল্যাপটপের স্পিড বাড়ানোর মূল উপাদান।
সাধারণ কাজের জন্য: ৮জিবি র্যাম যথেষ্ট।
অফিস ও মাল্টিটাস্কিং: ১৬জিবি র্যাম হলে ভালোভাবে কাজ করা যাবে।
হেভি সফটওয়্যার ও গেমিং : ৩২/৬৪ বা তার বেশি র্যাম দ্রুতগতির কাজের জন্য প্রয়োজন।
৩. স্টোরেজ: SSD না HDD?
SSD (Solid State Drive) : প্রচলিত HDD-এর তুলনায় অনেক দ্রুতগতির।
ল্যাপটপ দ্রুত চালু হয়, সফটওয়্যার দ্রুত লোড হয়।
HDD (Hard Disk Drive) : বেশি স্টোরেজের জন্য ভালো, তবে গতি কম।
সেরা অপশন : ৫১২জিবি SSD। যদি বাজেট কম হয়, তাহলে ২৫৬জিবি SSD + ১টিবি HDD নিতে পারেন।
৪. গ্রাফিকস কার্ড : গেমিং ও ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য
সাধারণ কাজের জন্য : ইন্টিগ্রেটেড GPU (যেমন Intel UHD বা AMD Vega) যথেষ্ট।
গ্রাফিকস ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং : NVIDIA GTX/RTX বা AMD Radeon গ্রাফিকস কার্ড দরকার।
৫. ডিসপ্লে
অফিস ও শিক্ষার্থীদের জন্য : ১৪-১৫.৬ ইঞ্চি, Full HD (1920×1080) রেজুলেশন উপযুক্ত।
ভিডিও এডিটিং ও গ্রাফিকস ডিজাইনের জন্য : বড় স্ক্রিন ও উচ্চমানের রেজুলেশন দরকার, যেমন 4K ডিসপ্লে।
৬. ব্যাটারি ব্যাকআপ
অফিস ও স্টুডেন্টদের জন্য : অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ব্যাটারি ব্যাকআপ প্রয়োজন।
যারা ভ্রমণ করেন বা ল্যাপটপ বহন করেন : ১০+ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকা ভালো।
৭. ওজন
যারা ল্যাপটপ নিয়ে বাইরে যান : ১.২-১.৮ কেজির মধ্যে হালকা ল্যাপটপ ভালো।
যাদের একাধিক ডিভাইস সংযোগ করতে হয় : USB-C, HDMI, SD Card Reader ইত্যাদি পোর্ট থাকা দরকার।
পেশা অনুযায়ী ল্যাপটপের সেরা বিকল্প
শিক্ষার্থীদের জন্য
প্রসেসর: Intel Core i3/5
র্যাম: ৬জিবি
স্টোরেজ: ২৫৬জিবি SSD
অফিসের কাজ ও মাল্টিটাস্কিং
প্রসেসর: Intel Core i5/7
র্যাম: ১৬জিবি
স্টোরেজ: ৫১২জিবি SSD
গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং
প্রসেসর: Intel Core i7/9
র্যাম: ৩২জিবি
গ্রাফিক্স: NVIDIA RTX সিরিজ
গেমারদের জন্য
প্রসেসর: Intel Core i7/9
গ্রাফিক্স: NVIDIA RTX ৩০৬০/৪০৮০
র্যাম: ১৬GB বা ৩২GB
সঠিক ল্যাপটপ বেছে নেওয়া মানেই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কার্যক্ষম একটি ডিভাইস পাওয়া। বাজেট ও প্রয়োজন বুঝে স্পেসিফিকেশন বাছাই করুন, তাহলেই ল্যাপটপ কেনা হবে লাভজনক ও দীর্ঘস্থায়ী।
সূত্র : আজতক বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।