প্রত্যুষ ইসলাম : ছোট বেলা থেকে মহাকাশ নিয়ে আমার অনেক কৌতূহল ছিল। কৌতূহলী মন নিয়ে আমি সবাইকে মহাকাশ নিয়ে অনেক প্রশ্ন করতাম। কিন্তু তাদের দেওয়া উত্তরে আমি সন্তুষ্ট হতে পারতাম না।
অবশেষে অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পর আমি মহাকাশ নিয়ে পড়াশোনা করতে শুরু করি। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে স্কুল তখন বন্ধ ছিল। এই ফাঁকে আমি বিভিন্ন ধরনের বই পড়েছি। মহাকাশ নিয়ে আমার পড়া বইগুলো হলো বিখ্যাত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিংয়ের আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম, দ্য ইউনিভার্স ইন অ্যা নাটশেল ও বাংলাদেশী লেখকের বই মহাকাশের মহাযাত্রা।
এছাড়াও আমি জ্যোতির্বিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের কিছু বই পড়েছি। এই বইগুলো পড়ে আমি মহাকাশ সম্পর্কে যা কিছু জেনেছি তার কিছু অংশ লিখব বলে ভাবলাম।
এই যেমন আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসার মতে মহাবিশ্ব প্রায় ১৪৭০ কোটি বছর আগে সৃষ্টি হয়েছে। মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞানী ভিন্ন ভিন্ন ধরনের তত্ত্ব দেন। এই সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য তত্ত্ব গুলো হলো এক্স্যান্ডিং দ্য ইউনিভার্স থিওরি, পালসেটিং থিওরি, স্টেডি স্টেড থিওরি ও বিগ ব্যাং থিওরি।
তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য থিওরি হলো বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ থিওরি। সর্বপ্রথম বিগ ব্যাং তত্ত্ব দেন বেলজিয়ামের জ্যোতির্বিদ জর্জ ল্যামেটার। তিনি তার ব্যাখ্যা হিসেবে মহাবিশ্বের প্রসারণশীলতাকে দেখান। তিনি বলেন যে মহাবিশ্ব ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। এর মানে মহাবিশ্ব নিশ্চয়ই এক সময় সংকোচনশীল অবস্থায় ছিল। সেই সংকুচিত অবস্থা থেকে একটি বিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়। এটিই হলো বিগ ব্যাং থিওরির মূল কথা। এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে, বিগ ব্যাং তত্ত্ব প্রথম সামনে আনেন জর্জ ল্যামেটার। আর বিগ ব্যাং তত্ত্বের আধুনিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন স্টিফেন হকিংন্স।
বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের ফলে আকাশের গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ এই সব সৃষ্টি হয়েছে। এই সব সৃষ্টির জন্য মহাবিশ্বকেও মানব জাতির মতো অনেক বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। বিবর্তনের মাধ্যমে মহাবিশ্ব যে যুগগুলো অতিক্রম করেছে সেগুলো হলো রেডিয়েশন যুগ, গ্র্যান্ড ইউনিফিকেশন যুগ, হ্যাড্রন যুগ, কোয়ার্ক যুগ ও ম্যাটার যুগ ইত্যাদি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা অনুযায়ী মহাবিশ্বের শেষ পরিণতি তিন ভাবে হতে পারে। যেমন:- বিগ রিপ, বিগ ক্রাঞ্চ ও বিগ ফ্রিজ। বিগ রিপ অবস্থায় আমাদের মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার অনেক বৃদ্ধি পাবে। এই অবস্থায় পদার্থ ভেঙে অণু-পরমাণুতে বিভক্ত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে। বিগ ক্রাঞ্চ অবস্থায় মহাবিশ্ব সংকুচিত হতে শুরু করবে। এক সময় মহাবিশ্বের সকল বস্তু এক জায়গায় মিলিত হয়ে সিঙ্গুলারিটির সৃষ্টি হবে এবং মহাবিশ্ব বলতে আর কিছুই থাকবে না। তবে বিগ ফ্রিজ উপায়ে মহাবিশ্ব ধ্বংসের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে মনে করা হয়।
বিগ ফ্রিজ অবস্থায় মহাবিশ্বের সংকোচন ও প্রসারণ কিছুই হবে না। এই অবস্থায় মহাবিশ্বের অস্তিত্ব অনেক দিন টিকে থাকবে। কিন্তু এক সময়ে গ্রহ-নক্ষত্র সবকিছু ভেঙে সম্পূর্ণরূপে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যাবে। শুধু বাকি থাকবে ব্ল্যাকহোল। নির্দিষ্ট সময় পরে ব্ল্যাকহোল রেডিয়েশনের ফলে শেষ হয়ে যাবে এবং মহাবিশ্ব চিরদিনের জন্য অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: শেরপুর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।