আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজা সংকটে এবার দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে তুরস্ক। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে কোমর বেঁধে নামছে আঙ্কারা। গাজায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো এবং ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়াতে সরাসরি মাঠে নামার ইঙ্গিত দিচ্ছে তুরস্ক।
সম্প্রতি হামাসের রাজনৈতিক পরিষদের প্রধান মোহাম্মদ দারবিশ এবং তার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিন। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, বৈঠকে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেয়ার উপায়, গাজাবাসীকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার যে কোনো পরিকল্পনার মোকাবিলা এবং ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
যদিও বৈঠকটি কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে এটি তুরস্কেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে তুরস্কের পক্ষ থেকে হামাস নেতাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের বিরুদ্ধে আঙ্কারা দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে এবং যেকোনো নতুন দখল প্রচেষ্টার বিরোধিতা করবে।
ইসরাইল সম্প্রতি রাফা শহরসহ গাজার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা জুড়ে সীমান্ত বরাবর নিরাপদ অঞ্চল সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে তারা যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও সামরিক অভিযান শুরু করেছে, গাজা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে এবং সব ধরনের মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছে। মানবিক সহায়তা এখন অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে হামাস।
হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দি বিনিময় চুক্তি, ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার, গাজার পুনর্নির্মাণ এবং অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহী। একইসাথে তারা জাতীয় ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গাজা পরিচালনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠনের মিশরীয় প্রস্তাবের তাৎক্ষণিক বাস্তবায়ন দেখতে চায়।
তবে, হামাস সম্প্রতি ইসরাইলের ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ১৮ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি বিস্তারিত চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামাসের আক্রমণের পর থেকে গাজা অঞ্চলে মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের একতরফা সামরিক অভিযানে গত মাসে কমপক্ষে ১,৬৯১ জন নিহত হয়েছে, যার ফলে এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর নিহতের সংখ্যা ৫১,০০০ ছাড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তুরস্কের সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং সেনা মোতায়েনের প্রস্তুতি ফিলিস্তিন সংকটে এক নতুন মোড় আনতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।