সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার জমদুয়ারা এলাকায় ধানী জমির মাটি অবাধে কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছে একটি চক্র। এ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে কথা বলায় ওই জমিতে ধান চাষ করা কৃষককে পিটিয়ে হাড়গোর ভেঙ্গে গ্রাম ছাড়া করার হুমকি দিয়েছে চক্রটি।
গত মঙ্গলবার বিকেলে শিবালয়ের জমদুয়ারা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ধান রোপন করা কয়েকটি কৃষিজমিতে একটি এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে পুকুর তৈরি করা হচ্ছে। পাশেই আরেকটি এস্কেভেটর বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। ধান রোপন করা কৃষি জমির মাটি কেটে পুকুরের পাড় বাধা হচ্ছে। বাকি মাটি পাশের একটি ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানায় স্থানীয়রা।
জানা যায়, স্থানীয় কিয়াম মাস্টারের জমি দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন আয়নাল মৃধা নামে এক ব্যক্তি। তার কাছ থেকে ৯৩ শতাংশ জমি ৪ হাজার টাকায় এক বছরের জন্য কটে নেন মো. তফিজ খা নামে এক ব্যক্তি। জমি তখন কচুরিপানায় ভর্তি ছিল। এরপর সে কচুরিপানা পরিষ্কার করে সেখানে ধান রোপন করেন। এতে নিজের শ্রম বাদ দিয়েই আরও ৩০ হাজার টাকা খরচ হয় তার। ধান গাছের সাইজ প্রায় এক ফুট সমান হয়। এরপর সেই জমির ধানসহ মাটি কেটে বিক্রি করে কিয়াম মাস্টারের ছোট ছেলে জুয়েল।
পঁচাত্তোর্ধ্ব সাহেব আলী জানান, জমদুয়ারা গ্রামের রাজু ও রিপন মোল্লা ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে।
মঙ্গলবার বিকেলেই এ বিষয়টি শিবালয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হলে তিনি তাৎক্ষণিক এসিল্যান্ডকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
ওইদিন সন্ধ্যায় অভিযান চালান এসিল্যান্ড। তবে অভিযানের খবর আগেই পেয়ে যায় মাটি ব্যবসায়ীরা। তারা মাটি কাটায় ব্যবহৃত দুটি এস্কেভেটর সরিয়ে নেয়। আর একটিকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়। এরপর মাটি কাটায় জড়িতদের নাম, ঠিকানা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন এসিল্যান্ড। কিন্তু ওইদিন মাঝরাত থেকে আবারও মাটি কাটা শুরু করে মাটি ব্যবসায়ীরা। বুধবার সন্ধ্যা থেকে ফের শুরু হয় মাটি কাটা। বিষয়টি এসিল্যান্ডকে জানানো হয়।
এ বিষয়ে শিবালয়ের সহকারি কমিশনার (ভূমি) এস এম ফয়েজ উদ্দিন বলেন, অভিযানে গিয়ে কাউকে পাইনি। তবে ফের মাটি কাটা শুরু করলে আবারো অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, এসিল্যান্ড অভিযানে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়েছেন কিয়াম মাস্টারের দুই নাতি ও রিপন মোল্লা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলায় তারা এখন কৃষক তফিজ খাকে গ্রাম ছাড়া করতে চায়। এজন্য লোকজন ঠিক করে রাখা হয়েছে। তফিজ খাকে যেখানে পাবে, পিটিয়ে হাড়গোর ভেঙে দিবে।
তফিজ খা বলেন, সাংবাদিকরা যখন এসেছিল সেসময় আমি পাশের একটি জমিতে কাজ করছিলাম। সাংবাদিকরা মাটি কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে আমি সব খুলে বলি। এ কারণে কিয়াম মাস্টারের দুই নাতি ও রিপন মোল্লা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছে। তারা আমাকে পিটিয়ে হাড়গোর ভেঙ্গে গ্রাম ছাড়া করতে চায়।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি এখনই থানা পুলিশকে বলে দিচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।