জুমবাংলা ডেস্ক : সাত বছর ধরে বাবা থাকেন মালয়েশিয়ায়। মাস তিনেক আগে পরকীয়ায় জড়িয়ে মা তার প্রেমিকের হাতধরে পালিয়ে যান। এমন অবস্থায় মায়ের খোঁজে ১ ফেব্রুয়ারি পাবনা থেকে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণদী গ্রামে আসে তিন শিশু সন্তান। ওই গ্রামে মায়ের প্রেমিক সুজন কুণ্ডু বাড়িতে ওই শিশুরা অবস্থান নেয়। তাদের দেখে পালিয়ে যায় মা। সেখানে টানা ২দিন অবস্থান নেওয়ার পর মাকে ফিরে না পেয়ে শনিবার সকালে ফের পাবনায় চলে যায় ওই অবুজ শিশুরা। অবস্থানরত শিশুরা হলো পাবনার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দা গ্রামের প্রবাসী কৃষ্ণ কুণ্ডুর সন্তান।
শুক্রবার কৃষ্ণ কেুণ্ডুর বড় মেয়ে বলে, গত সাত বছর ধরে আমার বাবা মালয়েশিয়ায় থাকেন। কয়েকমাস আগে মা বাড়ি থেকে চলে এসেছে। আমরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমার চাচার সঙ্গে এই বাড়িতে এসেছি। এই বাড়িতে এসে মাকে দেখেছি। কিন্তু মা আমাদের দেখে পালিয়ে গেছে। আমরা এখন কী করবো? কোথায় যাবো?।
শিশুদের চাচা সাগর কুণ্ডু বলেন, বছর খানেক আগে বিষ্ণদী গ্রামে একটি অন্ষ্ঠুানে এসেছিল বউদি (ভাবি)। সেখান থেকে সুজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রেম সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায় তিন মাস আগে সুজন পাবনায় গিয়ে বউদিকে নিয়ে ফরিদপুরে চলে আসে।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাই মালয়েশিয়ায় থেকে বউদির কাছে টাকা পাঠাতো। আর সেই টাকা বউদি তার প্রেমিক সুজনকে দিতেন। সুজন আমার ভাইয়ের টাকায় বাড়ি করেছে। সুখে-শান্তিতে আছে। কিন্তু মা-বাবা ছাড়া আমার শিশু ভাতিজা-ভাতিজিরা অসহায় হয়ে পড়েছে। আমরা এখন ওদের নিয়ে বিপদে আছি। তাই বাধ্য হয়ে ওদের নিয়ে সুজনের বাড়িতে এসেছিলাম। কিন্তু এই বাড়িতে ২দিন অবস্থান নিয়ে বউদিকে না পেয়ে ওদের নিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছি। তবে আমরা এর একটা সমাধান চাই।
শিশুদের মা ও তার প্রেমিক সুজন পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে সুজন কুণ্ডুর বাবা দিলীপ কুণ্ডু বলেন, আমার ছেলে বাড়িতে নেই। তার সঙ্গে যে নারী ছিল, সেও বাড়িতে নেই। আমি এখন কীভাবে সমাধান দেবো।
শনিবার বিকালে বল্লভদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। অভিযুক্ত সুজন বাড়িতে নেই। তাকে খুজে বের করার চেষ্টা করছি। আশা করি সুজনের সাথে কথা ওই তিন শিশুকে তাদের মায়ের কাছে পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পাবরা।
ফরিদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল নগরকান্দা) মো. আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, মায়ের খোঁজে শিশুদের অবস্থানের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। শিশুদের মা ও তার প্রেমিক সুজনকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। যেহুত ওই নারীর তিনটি সন্তানই অপ্রাপ্ত বয়স্ক, তাই আমার সমাজ সেবা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি ব্যবস্থা নেবেন। একই সাথে যদি পাবনা থেকে কেউ অভিযোগ করে, তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। এ বিষয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সৈয়দ ফজলে রাব্বী নোমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিচুর রহমান বালী বলেন, আমি শনিবার সকালে ওই বাড়িতে লোক পাঠিয়েছিলাম। সকালেই ওই শিশুরা নাকি পাবনায় চলে গেছে। তারপরও খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।