স্পোর্টস ডেস্ক : চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে বর্তমান ওয়ানডে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। সর্বশেষ গত শনিবার মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২২৯ রানে বিধ্বস্ত হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে পরাজয়ের লজ্জা পেয়েছে ইংলিশরা। বার্তাসংস্থা এএফপির দৃষ্টিতে ইংলিশদের এমন হারের পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে।
ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ : মুম্বাইয়ে টস জয়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের আধিপত্য প্রমাণের সুযোগ ছিল ইংল্যান্ডের। মুম্বাইয়ের প্রচণ্ড গরম ও আর্দ্রতার মধ্যেও বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন জস বাটলার। যে কারণে পুরো দল তাদের সব শক্তি ফিল্ডিংয়েই ব্যয় করে ফেলেছিল। টসের সময় ইংলিশ অধিনায়ক বলেছিলেন, এই মাঠটি সাধারণত রান চেজিংয়ের জন্য ভালো।
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে মাথায় না রেখে অতীত ইতিহাস বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে ইংল্যান্ড আগেও বেশ কয়েকবার ভুল করেছে। শনিবার বোলিংয়ের সময় পেসার ডেভিড উইলিসহ আরও কিছু খেলোয়াড়ের বারবার পেশীতে টান পড়েছে, প্রচণ্ড গরমে যা স্বাভাবিক। ইংল্যান্ডের কোচ ম্যাথু মট বলেছেন, ‘আমরা যা ভেবেছিলাম গরম তার থেকেও অনেক বেশি ছিল।’
কিন্তু ভারতে বেশ কয়েক সপ্তাহ কাটানোর পর মুম্বাইয়ের আবহাওয়া সম্পর্কে না জানার বিষয়টি অনেকটা খোঁড়া যুক্তি হিসেবেই অনেকে বিবেচনা করছে। সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসির হুসেইন ২০১৯ বিজয়ী অধিনায়ক এউইন মরগানের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, মরগানও পরিসংখ্যান ব্যবহার করতেন, কিন্তু তার মধ্যে ঠিক ওই মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেবার সৎসাহসও ছিল। তোমাকে অবশ্যই সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগে থেকে একটা মাইন্ড সেট করার বিষয় অনেক সময় কাজে আসে না।
রান তাড়া করে সফল হতে পারছে না ইংল্যান্ড : ওয়ানডেতে সাম্প্রতিক সময়ে পরে ব্যাটিং করে ইংল্যান্ডের ব্যর্থতার বিষয়টি সবাই অবগত। বাটলারেরও এই বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত ছিল। গত ৮ ম্যাচের মধ্যে সাতটিতেই পরে ব্যাটিং করে ইংল্যান্ড পরাজিত হয়েছে। এই তালিকায় শনিবারের ম্যাচের আগে এবারের বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬৯ রানের পরাজয়ের ম্যাচটিও রয়েছে। যদিও সেই ক্ষতিকে খারাপ ফল হিসেবে তারা দেখতে নারাজ।
হুসেইন বলেন, সর্বশেষ ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা যখন একে অপরের মোকাবিলা করেছিল, তখন ইংল্যান্ড খুব অল্প রানে হেরেছিল। সে কারণেই পরিসংখ্যানের দিকে ইংল্যান্ডকে সতর্কতার সঙ্গে নজর রাখতে হবে।
নতুন বলে সাফল্যের অভাব : রিস টপলি ছাড়া আর কোনো ইংলিশ বোলারই এবারের বিশ্বকাপে নতুন বলে তেমন একটা সুবিধা করতে পারছে না। এদিকে আঙ্গুলের চোটের কারণে টপলি ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেছেন। এ পর্যন্ত ইংল্যান্ডের তিনটি পরাজয়েই প্রতিপক্ষ ওপেনাররা বড় রান করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার রেজা হেনড্রিক্স করেছেন ৮৫ রান। টপ-অর্ডারের বড় পার্টনারশিপই মূলত ইংল্যান্ডের হারের মূল কারণ।
তিন ম্যাচে মাত্র দুই উইকেট পাওয়া ক্রিস ওকস দল থেকে বাদ পড়েছেন। তিন ম্যাচে তার গড় ছিল ৬৭ দশমিক ৫। কিন্তু তার পরিবর্তে দলে আসা অন্যরাও নিজেদের প্রমাণে ব্যর্থ। ডেভিড উইলি ও গাস অ্যাটকিনসন ৯ ওভার করে বল করে যথাক্রমে ৬১ ও ৬০ রান দিয়েছেন। এই সুযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় সমান স্কোর গড়ে তুলে।
দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ও ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বেন স্টোকস ইনজুরির কারণে আগের তিন ম্যাচে খেলেননি। এরপর শনিবার প্রথমবার খেলতে নেমেছিলেন। যদিও এবারের আসরে তার বোলিং ফিটনেস নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। শুধু ব্যাটার হিসেবে খেলতে অবসর ভেঙ্গে ভারতে এসেছেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।