জুমবাংলা ডেস্ক : প্রবাস ফেরত অলি মিয়া (৪৫)। পরিবারের স্বচ্ছলতা দূর করতে সাত বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু সেখানে কয়েক বছর থাকার পর তেমন সুবিধা করতে না পেরে দেশে ফিরে আসেন।
এরপর স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেন গরুর খামার করার। দুটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু কিনে খামারের কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয় নি। ধীরে ধীরে তার খামার বড় হতে থাকে। বাড়তে বাড়তে তার খামারের পশুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫টিতে। এরই মধ্যে সবগুলো গরু বিক্রি হয়ে গেলেও রয়ে গেছে বিশালদেহী টাইগার বাবু। ৩০ মণ ওজনের টাইগার বাবু উচ্চতায় সাড়ে ৫ ফুট এবং লম্বায় ১১ ফুট। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতারা ভিড় করছেন তার বাড়িতে। এ পর্যন্ত এর দাম উঠেছে সাত লাখ টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের মছলন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা অলি মিয়া বলেন, দেশে এসে বছর দুয়েক আগে স্ত্রী হাবিবা বেগমের পরার্মশে বাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে তুলি খামার। একে একে বংশ বৃদ্ধির মাধ্যমে গরুর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫টিতে।
খামারে থাকা অন্যন্য গরুগুলে বিক্রি হয়ে গেছে। এখন অবশিষ্ট রয়েছে টাইগার বাবু। প্রাকৃতিক উপায়ে একে হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। নিয়মিত খৈল, ভুসি, খড়, ঘাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের মতই চলছে এর পরিচর্যা। শুধু তাই নয়, খাবারের জন্য বাড়ির পাশের জমিতে ধান চাষ বাদ দিয়ে ঘাসের আবাদও করেছি। আশা করছি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে আমার গরুটি সবচেয়ে বড়।
এর ওজন প্রায় ৩০ মণ। আগাগোড়া একেবারে থলথলে মাংসল। পরিবারের সদস্যের মত লালন-পালন করা এ গরুটিকে বিক্রি করতে কষ্ট হবে। এখন পর্যন্ত এর দাম উঠেছে সাত লাখ টাকা। তবে ১০ লাখ টাকা হলে এটি বিক্রি করে দেব। এরপর আবার গরু কিনে খামার বড় করব।
ওলি মিয়ার স্ত্রী হাবিবা বেগম বলেন, আমার স্বামীর পাশাপাশি আমিও গরুটির যত্ন নিচ্ছি।
স্থানীয় লোকজন বলেন, খামারি অলি গরুটির জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। গো খাদ্যের দাম বেড়ে গেলেও তিনি কষ্ট করে এটি লালন পালন করে যাচ্ছেন। এলাকায় এর চেয়ে বড় গরু আর দেখিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্ত মো. শাহ জালাল বলেন, উন্নত প্রযুক্তিতে হৃষ্টপুষ্ট করার ওপর দেওয়া প্রশিক্ষণের ফলেই বিভিন্ন খামারে ২৫/৩০ মণ ওজনের পশু পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিক্রির ঝামেলা এড়াতে অনলাইন মার্কেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খামারি অলি মিয়া একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তার মতো উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে। পাশাপাশি নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, মিটবে কোরবানির পশুর চাহিদা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।