বিনোদন ডেস্ক : বলিউড পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজের একটি ছবিতে কাজের প্রস্তাব পেয়েছিলেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। তবে মা হতে যাওয়ার কারণে সেই সিনেমার কাজ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন নায়িকা।
গতকাল সোমবার (৯ মে) রাতে সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন তিশার স্বামী নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
ঘটনাটি জানিয়ে ফারুকী বলেন, তিশা যেদিন জানতে পারে ও কনসিভ করেছে তার কয়েক দিন পরেই ওর কাছে কল আসে বিশাল ভরদ্বাজের কাস্টিং ডিরেক্টরের কাছ থেকে।
ওই ছবিটার জন্য যেটা নিয়ে পরে তারা আরো বেশ কিছু বাংলাদেশি অভিনেত্রীর সাথে কথা বলেছে, এবং যেটা নিয়ে নানা নিউজও হয়েছে। যা-ই হোক উনি জানান যে তিশাকে কাস্ট করতে চান তারা। শুটিংয়ের সময় জানিয়ে দিয়ে তারা জানান তিশা আগ্রহী হলে তারা পরবর্তী বিষয়গুলো ঠিক করবেন।
দ্বিধা ছাড়াই এমন একটি সুযোগ তিশা ছেড়ে দেন উল্লেখ করে ফারুকী বলেন, তিশা স্কুলজীবন থেকে কাজ করছে। আগাগোড়া কাজ অন্তপ্রাণ একজন মানুষ কিভাবে এই বিষয়টাকে ডিল করে সেটা নিয়ে আমি ভাবতেছিলাম। কিন্তু তিশার যেকোনো সিদ্ধান্ত যেহেতু ও স্বাধীনভাবেই নেয়, আমি ওর সাথে এটা নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলছিলাম না। আমি দেখলাম ও বেশ শান্তভাবে দ্বিতীয় দিন কাস্টিং ডিরেক্টরকে বুঝিয়ে বলে যে, সে কাজটা করতে পারছে না, কারণ এই মুহূর্তে ও কোথাও মুভ করতে চাচ্ছে না, এই মুহূর্তে সে একটু নিরিবিলি থাকতে চায়, কারণ সে কনসিভ করেছে। কোনো রকম দোটানা ছাড়াই ও ছেড়ে দেয় ওই সুযোগটা।
তিশার ত্যাগ নিয়ে ফারুকী বলেন, ওই যে শুরু, তারপর দেখে আসছি একের পর এক তিশাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে ঘুম, পছন্দের খাওয়া, নিজের জন্য রাখা সময়। আমি মোটামুটি চেষ্টা করি সব সময়ই তিশার পাশে থাকতে, এক সাথে ইলহামকে বড় করতে। তবু সব সময় আমি ভূমিকা রাখার সুযোগ পাই না। কারণ তিশা কিছু কাজের ব্যাপারে এতই স্পর্শকাতর যে আমার হাতেও ছাড়তে রাজি না। ডায়াপার পরানো বা অন্যান্য কাজ আমার হাতে মাঝেমধ্যে ছাড়লেও গোসল করানোটা আমার হাতে ছাড়তে চায় না। তবু আমি লেগেই থাকি। চেষ্টা করি যতখানি সম্ভব দায়িত্ব ভাগ করে নিতে। ধরা যাক ও ডাবিংয়ে গেল, আমি বেবি সিটার হিসেবে ওর সাথে গিয়ে বসে থাকলাম দূরে কোথাও। কিন্তু একজন মাকে সন্তানের জন্য যা যা করতে হয়, যা যা জীবন থেকে ছাড়তে হয়, বাবারা চব্বিশ ঘণ্টা সময় দিলেও মায়ের যে স্ট্রেস, যে কন্ট্রিবিউশন তার ধারেকাছেও যাইতে পারবে না।
তিশাকে তার ত্যাগের কারণে ধন্যবাদ জানাতে চাইছিলেন ফারুকী। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছিলেন না। মা দিবসকে কাজে লাগিয়ে সুযোগটা ব্যবহার করলেন বলে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে জানালেন।
ফারুকী বলেন, এই কথাগুলা আমরা সবাই জানি। আমিও জানতাম, থিওরেটিক্যালি। কথাগুলোর অর্থ কী সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি বাবা হওয়ার পর, বাবা হয়ে সন্তানের মায়ের পাশে থাকার পর। আমি কখনো এই সব নানাবিধ দিবসটিবস পালন করি না। কিন্তু এবারের মা দিবসের উসিলাটা কাজে লাগাইয়া আমি তিশাকে এই কথাগুলা বলতে চাইছি। ‘ডুব’ ছবিতে একটা সিন আছে না, সাবেরি মাকে সামনাসামনি ধন্যবাদ দিতে পারে না তাই একটু আড়ালে গিয়ে ফোন দিয়ে বলে? আমার অবস্থাও সেই রকম। মধ্যবিত্ত আড়ষ্টতায় সামনাসামনি ধন্যবাদ দিতে না পারার কারণে ফেসবুকে লিখে দিচ্ছি। লিখতে গিয়ে হচ্ছে আরেক বিপদ। একটু পরপর তিশা এসে বসে পাশে, কখনো ইলহাম খেলা করতে চায়। ফলে গতকাল শুরু করা লেখাটা আজকে এসে শেষ হইলো। বিলম্বিত মা দিবসের শুভেচ্ছার এই হেতু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।