আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টাইটানিক সিনেমার একটি দৃশ্যে দেখা যায়, টাইটানিক ডোবার আগে একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর অপেক্ষা করছেন এক প্রবীণ যুগল। বাস্তবেও এমনটা ঘটেছিল। আটলান্টিকে নিহত সাবমেরিন টাইটানের চালক ও ওশানগেট কম্পানির প্রধান নির্বাহী স্টকটন রাশ। তার স্ত্রী ওয়েন্ডি রাশ ওশেনগেটের কমিউনিকেশন অফিসার।
টাইটানিকে ডুবে যাওয়া ওই প্রবীণ যুগলের প্রপৌত্রী হলো ওয়েন্ডি। টাইটানিক সিনেমার সেই প্রবীণ যুগল, বাস্তবে যাদের নাম আইসিডর স্ট্রাউস ও আইডা স্ট্রাউস। স্ট্রস দম্পতির একমাত্র মেয়ে মিনি। ১৯০৫ সালে তিনি ডা. রিচার্ড উইলকে বিয়ে করেছিলেন।
তাদের পুত্র জুনিয়র উইল নিউ ইয়র্কের মেসির প্রেসিডেন্ট হন। তার পুত্র তৃতীয় রিচার্ড উইল পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তারই মেয়ে হলেন ওয়েন্ডি রাশ। আজ তাদেরই পরিবারের এক সদস্য সেই টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে সমুদ্রেই ডুবে গেলেন।
আইসিডর স্ট্রাউস ও আইডা স্ট্রাউস ছিলেন টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির যাত্রী। তাদের জন্ম জার্মানিতে হলেও বিয়ের পর সপরিবারে আমেরিকায় চলে আসেন। ১৯১২ সালে টাইটানিকের মেইডেন যাত্রায় আইসিডর ও তার স্ত্রী ছিলেন ধনী যাত্রীদের মধ্যে অন্যতম। টাইটানিক ডোবার আগে যাত্রীদের লাইফবোটে তোলার চেষ্টা চলছিল। সীমিতসংখ্যক লাইফবোট থাকায় সবাইকে তোলা সম্ভব ছিল না।
এর মধ্যে নারী ও শিশুদেরই প্রাধান্য দেওেয়া হচ্ছিল। আইসিডরকে লাইফবোটে উঠতে বলা হয়েছিল। তবে নারী ও শিশুদের তাতে চড়তে সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তা দেখে তার স্ত্রী আইডাও সরে দাঁড়ান, স্বামীকে ডুবন্ত জাহাজে রেখে তিনি যেতে চাননি। পরবর্তী সময়ে উদ্ধার অভিযানে আইসিডরের মরদেহ পাওয়া যায়। আইডার দেহাবশেষ মিলিয়ে যায় সমুদ্রে।
এই স্ট্রাউস দম্পতির প্রপৌত্রী ওয়েন্ডি ১৯৮৬ সালে বিয়ে করেন বিমানচালক স্টকটন রাশকে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার জন্য তারাই তৈরি করেন সাবমেরিন টাইটান। তারা ২০০৯ সালে ‘ওশেনগেট এক্সপেডিশনস’ নামের এই প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন। নিহত স্টকটন রাশ ডুবোযান টাইটানের পাইলট ছিলেন। অবশেষে টাইটানিকের সঙ্গে মিলে গেল টাইটান। এর আগেও টাইটানিক দেখতে গিয়েছিলেন স্টকটন রাশ, ফিরেও এসেছিলেন। এবার আর হলো না।
সূত্র : বিবিসি, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ডেইলি মেইল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।