জুমবাংলা ডেস্ক: রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম মহাখালী বাস টার্মিনাল। সময় তখন সকাল সাড়ে ৬টা। ঢাকার বাইরে থেকে আসা যাত্রীবাহী বাসগুলো টার্মিনালে পৌঁছে যাত্রী নামাতে ব্যস্ত। ছোট ছোট চায়ের দোকানগুলোও খুলতে শুরু করেছে। হঠাৎ ধুম করে একটি শব্দ। এরপরই কাচ ভেঙে পড়ার আওয়াজ।
এনা পরিবহনের একটি বাসের দরজা থেকে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ২২ বছর বয়সী এক যুবক। ঘাড়ের ব্যাগটিও দুরে ছিটকে গিয়ে পড়লো।
এই দৃশ্য দেখে টার্মিনালে থাকা বাসের কয়েকজন স্টাফ ও পথচারীরা এগিয়ে গেলেন। তিনজন মিলে টেনে তুললেন পড়ে যাওয়া যুবককে। ফুটপাতের ওপর বসানোর পর দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকলো সেই যুবক।

নাম জানতে চাইলে অস্পষ্ট কণ্ঠে বললো, ‘ফিরোজ’। মুখ থেকে লালা বেয়ে পড়ছিল। উপস্থিত সকলের সামনে একবার বমিও করলো। ঘুমে চোখ খুলতে পারছে না, মাথা ঘোরাচ্ছে- ইশারায় এতটুকু বোঝাতে পারলো সে। অবস্থা দেখে সহজেই অনুমান করা গেল, গাড়িতে থাকতে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছে সে।
তাকে নেশা জাতীয় কিছু খাইয়ে টাকা-পসয়া, মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে অজ্ঞান পার্টি। উপস্থিত জনতা গাড়ির চালক সুপারভাইজারকে খুঁজতে লাগলেন। কিন্তু ঝামেলা এড়াতে ততক্ষণে গাড়ি নিয়ে চলে গেছেন চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার।
ফিরোজ নামের ওই যুবক এনা পরিবহনের ঢাকা-সিলেট রোডে চলাচল করা একটি নন এসি বাসে সিলেট থেকে ঢাকায় এসেছেন। গাড়ি নম্বর ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৯৫৭৬। অসুস্থ ফিরোজের কাছে পুরো ঠিকানা বা মোবাইল নম্বর জানতে চাইলে কিছুই বলতে পারছিলেন না তিনি।
কী কী খোয়া গেছে জানতে চাইলে পকেট খুঁজে ম্যানিব্যাগ বের করে দেখে সাথে থাকা ১৫ হাজার টাকা নেই। তার ব্যবহার করা স্মার্টফোনটিও নেই। শুধু কাপড়ের ব্যাগটি রয়েছে।
এ সময় বকুল নামের এক পথচারী বললেন, ‘বেচারার টাকা-মোবাইল সবই গেছে; জানটা যে যায় নাই, সেটাই কপাল। তাড়াতাড়ি ছেলেটাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মনেহয় বাঁইচা যাবে। অনেক সময় তো এমন ওষুধ খাওয়ায় যে, মানুষ মরেও যায়।’
এরপর স্থানীয় কয়েকজন পথচারীদের সহায়তায় একটি সিএনজিতে করে ওই যুবকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পর টার্মিনালে গিয়ে এনা পরিবহনের ওই বাসটি খোঁজার চেষ্টা করা হলে একাধিক পরিবহন শ্রমিক নানাভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



