জুমবাংলা ডেস্ক : তৃতীয় লিঙ্গের চুমকি নামের একজন বলেন, ‘পরিবার ও সমাজ থেকে আলাদা থাকতে থাকতে আমাদের এ অবস্থা। কাজ করতে চাইলেও কেউ কাজ দেয় না বরং নানা উপহাস করেন। তাই পেটের দায়ে যখন যেভাবে পারি লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করি।’
কনের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি সাজাচ্ছে বরপক্ষ। বরযাত্রীরা সবাই দাঁড়িয়ে আছে আশেপাশে। বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্য দেখা গেছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর এলাকায়।
এমন অদ্ভুত কাজ কেনো করা হচ্ছে- মনে প্রশ্ন আসতেই পারে পাঠকের।
চিরচেনা বাঙালি! বিকল্প পথ খুঁজে নিতে আমাদের জুড়ি মেলা ভার। শুধুমাত্র তৃতীয় লিঙ্গের চাঁদাবাজি থেকে বাঁচতে এ অভিনব উপায় বের করেন বর।
রাধানগর এলাকার স্থানীয়রা জানান, তৃতীয় লিঙ্গের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। রাস্তা, হাট-বাজার, বিয়েবাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও গ্রামে-গঞ্জে গিয়ে গিয়ে মানুষজনকে বিড়ম্বনায় ফেলেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছু বরের ছোট ভাই বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল এলাকায় বিয়ে করতে এসেছেন আমার ভাই। ভাবির বাড়ি পুরানবাড়ি মাঝের ছড়া এলাকায়। আমরা ১০ থেকে ১৫টি গাড়ি নিয়ে এসেছি। তবে প্রতিটা গাড়ির দুরত্ব দুই শ’ গজ।
‘বরের গাড়িটা আমরা সাজিয়ে আনতে পারতাম কিন্তু, সাজাইনি। কারণ, রাস্তা আটকিয়ে চাঁদা দাবি করেন তৃতীয় লিঙ্গের বিভিন্ন দল। চাঁদা না দিলে রাস্তা ছাড়েন না তারা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বিভিন্নভাবে অশালীন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন।’
তৃতীয় লিঙ্গের চুমকি নামের একজন বলেন, ‘পরিবার ও সমাজ থেকে আলাদা থাকতে থাকতে আমাদের এ অবস্থা। কাজ করতে চাইলেও কেউ কাজ দেয় না; বরং নানা উপহাস করেন। সমাজ আমাদের ভালো হতে দেয় না।
‘আমাদেরও তো জীবন আছে। খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে হবে। তাই পেটের দায়ে যখন যেভাবে পারি লোকজনের কাছ থেকে টাকা আদায় করি। এখানে আমাদের দোষ কোথায়?’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুয়েব হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১১জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ রয়েছেন। তাদেরকে জেলাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। তাদের এখনও ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে ২০২৪ সাল থেকে তাদের ভাতা দেয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।