বিনোদন ডেস্ক : মডেলিং, বড় পর্দায় একের পর এক সফল সিনেমা আর স্বামী-পুত্র নিয়ে পরিপাটি সংসার ফেলে বলিউডি অভিনেত্রী সোনালী বেন্দ্রেকে এক সময় দৌড়াতে হয়েছে বিদেশ বিভূঁইয়ে, ক্যান্সারকে পরাজিত করতে। দীর্ঘ চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে অভিনেত্রী জানালেন, কীভাবে কেমন করে দুঃসময় পাড়ি দিয়েছেন তিনি।
এনডিটিভি লিখেছে, এক পডকাস্টে হাজির হয়ে সোনালী বলেন, ছয় বছর আগে যখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে, প্রথমেই মনে হয়েছিল, “আমার কেন ক্যান্সার হল!
“২০১৮ সালে আমার ক্যান্সার ধরf পড়ে চতুর্থ পর্যায়ে গিয়ে, তখন রোগ শরীরে অনেকটাই ছড়িয়ে পড়েছে। ধীরে ধীরে চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনি। নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে শুরু করি, আমি নয় কেন!”
সোনালীর ভাষ্য, তিনি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা জানান, কারণ তার ছেলে, বোন বা পরিবারের সদস্যদের কারও ক্যান্সার হয়নি। কারণ তিনি মনে করেন এই বিপদ মোবাবিলার জন্য তার মনোবল ও সামর্থ্য ছিল।
“ইতিবাচক চিন্তাগুলোকে আঁকড়ে ধরেই ভয়ের চৌকাঠ পার করেছিলাম সে সময়।“
নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতলে ক্যান্সারের চিকিৎসার কথা তুলে ধরে সোনালী বলেন, “আমার পরিস্থিতি খুব খারাপের দিকে চলে যায়। চিকিৎসকরা যা পরামর্শ দিয়ে গেছেন, চোখ বন্ধ করে সেটাই অনুসরণ করেছি। কিন্তু মনকে দুর্বল হতে দিইনি। একটু ভালো লাগলে টুইটারে ঢুকতাম। সবার বার্তা পড়তাম, উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারো সঙ্গে সরাসরি কথা বা দেখাসাক্ষাতের সুযোগ ছিল না, যোগাযোগের মাধ্যম বলতে একমাত্র টুইটারকেই বেছে নিতে হয়েছিল।“
কথা বলতে বলতে আপ্লুত সোনালী জানালেন, কিছুদিন আগে তিনি ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন।
“সেই একই চেয়ার, এই দৃশ্য, চার বছর পর দেখলাম। রোগীদের একটু ভালো থাকার আশা। অনেক কিছু হয়ত বদলে গেছে, কিন্তু মূল ব্যাপারটা এক রয়ে গেছে।
“ওখানে বসে থাকা রোগীদের দেখতে কেমন অবাস্তব লাগছিল। চোখের উপর ভেসে উঠছিল নিজের চিকিৎসার সময়ের দৃশ্য। মনে হচ্ছিল আমি এই রকমই সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম… কেমোথেরাপি স্যুইট, একই ওয়েটিং রুম, কেবল মুখগুলি আলাদা। মনে হচ্ছিল, ওই রোগীদের বলি, হাল ছেড়ো না, আমিও ওই জায়গায় ছিলাম, কিন্তু এখন আমাকে দেখ প্লিজ। সবাইকে বলতে ইচ্ছা হল, এখনো আশা আছে।“
সুস্থ হওয়ার পর কাজেও ফিরেছেন সোনালী। তবে বলিউডে নয়, গত কয়েক বছরে দক্ষিণের দুটি সিনেমায় তাকে দেখা গেছে। অবশ্য হিন্দি সিনেমা জগতের সেলিব্রেটিদের অনুষ্ঠানে সোনালী নিয়মিত উপস্থিত হন।
সোনালি বেন্দ্রের প্রথম সিনেসা ‘আগ’, মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। প্রথম সিনেমাতেই অভিনেত্রী জিতে নেন ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। এরপর ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি অর্ধশতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন।
সোনালীর জনপ্রিয়তা বাড়ে ‘বোম্বে’ সিনেমায় ‘হাম্মা হাম্মা’ গানের সঙ্গে নাচের জন্য। এছাড়া ‘দিলজ্বলে’, ‘ভাই’, ‘ডুপ্লিকেট’, ‘মেজর সাহাব’, ‘জখম’, ‘সারফারোশ’, ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ এর মত ব্যবসাসফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
বলিউডের পাশাপাশি সোনালী অভিনয় করেছেন তামিল, তেলেগু, মারাঠি আর কান্নাড়া ভাষার সিনেমায়। সোনালীর স্বামী বলিউডের চলচ্চিত্র পরিচালক গোল্ডি বহেল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।