জুমবাংলা ডেস্ক : ১০০ টাকা সমপরিমাণের তৈরি পোশাক রফতানি করতে গিয়ে এই খাতের উদ্যোক্তাদের কাঁচামাল আমদানিতে খরচ করতে হচ্ছে ২৮ টাকা ৫০ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরের (২০২২-২৩) এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এই তিন মাসের তথ্য অনুযায়ী, তৈরি পোশাক খাতের নিট রফতানির রেশিও ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ; যা এযাবতকালের সর্বোচ্চ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, এক বছর আগেও একই সময়ে ১০০ টাকা রফতানির জন্য কাঁচামাল আমদানিতে খরচ হয়েছে ৪৫ টাকা ৯৫ পয়সা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের (২০২১-২২) শেষ প্রান্তিকে (এপ্রিল থেকে জুন) তিন মাসে মোট পোশাক রফতানি অর্থমূল্যের ৪৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে কাঁচামাল আমদানি বাবদ। নিট রফতানির (রফতানি মূল্য থেকে কাঁচামাল আমদানির পরিমাণ বাদ দিয়ে প্রকৃত রফতানি) অর্থমূল্য ছিল ৬০৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের তুলনায় যা ৪৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি।
আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে শেষ প্রান্তিকে তৈরি পোশাক খাতের মোট রফতানি ছিল ১১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ৩ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে কাঁচামাল আমদানিতে; যা মোট আয়ের ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৩ হাজার ১৪৫ কোটি ৬৭ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পোশাক রফতানি হয় বাংলাদেশ থেকে, যা তৈরিতে ১ হাজার ২৮৫ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার ডলারের কাঁচা তুলা, কৃত্রিম সুতা, তুলাজাত সুতা এবং বস্ত্র ও অ্যাকসেসরিজের মতো কাঁচামাল আমদানি করা হয়। সে হিসাবে ওই অর্থবছরে মোট রফতানির ৪০ দশমিক ৮৬ শতাংশ অর্থ ব্যয় হয় পোশাকের কাঁচামাল আমদানি বাবদ।
এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট পোশাক রফতানির অর্থমূল্য ছিল ৪ হাজার ২৬১ কোটি ডলার। এ পরিমাণ অর্থের পোশাক তৈরিতে বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানি হয়েছে ১ হাজার ৯৪৩ কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ডলারের। সে হিসাবে পোশাক রফতানির মোট অর্থমূল্যের ৪৫ দশমিক ৬১ শতাংশ ব্যয় হয়েছে কাঁচামাল আমদানিতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক নেট রফতানি (মোট রফতানি থেকে কাঁচামাল আমদানি বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়) রেশিও ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ-এ উন্নীত হয়েছে, যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। একই সময়ে নিট রফতানি হয়েছে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের। এর ফলে, আগের বছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৪৮ শতাংশ কমেছে।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখন স্থানীয়ভাবে ডেনিম কাপড় কিনে থাকি। তবে বিক্রেতারা এই কাপড় তৈরির জন্য দেশের বাইরে থেকে সুতা বা ডাইং কেমিক্যাল আমদানি করতে পারে। এসব কারণে আমাদের কাঁচামাল আমদানি ব্যয় কিছুটা কমেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘ক্রমবর্ধমান ডলারের চাপের কারণে পোশাক রফতানিকারকরা এখন টাকায় লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) খুলছেন এবং স্থানীয় বাজার থেকে কিছু কাঁচামাল সংগ্রহ করছেন।’
২০২২-২৩ অর্থবছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে নিট রফতানি বা দেশীয় গার্মেন্ট খাতে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার যোগ হয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পরিমাণ আগের অর্থবছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ বেশি।
এদিকে, এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে কাঁচামাল আমদানিতে ব্যয় গত আড়াই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে আমদানি ২ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার কম ছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।