স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টেও ‘বজ্রপাতের’ মত জ্বলে উঠতে চান ইংল্যান্ড পেসার মার্ক উড। গত ডিসেম্বরের পর বড় ফরম্যাটে খেলতে নেমেই লিডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে দুর্দান্ত বোলিং পারফরমেন্সের সাথে ব্যাট হাতে লোয়ার অর্ডারে অবদান রেখে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক বনে যান তিনি।
লিডস টেস্টে বল হাতে দুই ইনিংসে ১০০ রানে ৭ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ব্যাট হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৬ বলে মারমুখী মেজাজে ৪০ রান করেন তিনি। এমন পারফরমেন্সের সুবাদে ম্যাচ সেরা হন উড। তার অলরাউন্ড পারফরমেন্সে তৃতীয় টেস্ট ৩ উইকেটে জিতে সিরিজ জয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখে ইংল্যান্ড। প্রথম দুই টেস্ট হারের কারনে বর্তমানে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ইংলিশরা।
উডের অতিরিক্ত গতি ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণের ধার বাড়িয়েছে। উডকে সামলাতে তৃতীয় টেস্টে বেগ পেতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের। জয় পাওয়া এজবাস্টন এবং লর্ডস টেস্টে এমন দ্রুত গতির বোলিং সামলাতে হয়নি সফরকারী ব্যাটারদের।
লিডসে বল হাতে প্রতি ঘণ্টায় ৯৬ দশমিক ৫ মাইল গতিতে বল করেছেন উড। গত ডিসেম্বরে পাকিস্তান সফরের পর টেস্ট ক্রিকেটে নিজের প্রথম স্পেলের আগে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক ও ডারহামের সতীর্থ বেন স্টোকসের কাছ থেকে মাত্র একটি নির্দেশনা পেয়েছিলেন উড।
সাংবাদিকদের উড বলেন, ‘বেন শুধু আমাকে জিজ্ঞেস করেছে আমি প্রস্তুত কিনা? বিদুৎ গতিতে বোলিং করতে প্রস্তুত? আমি বলেছিলাম, হ্যাঁ।
তিনি আরও বলেন, ‘স্টোকস আমাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলো। আমি তাকে ভালো করে চিনি এবং সে-ও আমাকে ভালো করেই জানে। এমন সর্ম্পক সবকিছুই সহজ করে দেয়।’
ম্যানচেস্টারে তৃতীয় টেস্টে আবারও জ¦লে উঠার জন্য প্রস্তুত কি-না এমন প্রশ্ন করা হয়েছিলো উডকে। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে উড বলেন, ‘অবশ্যই। বজ্রপাত দু’বার হতেই পারে।’
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা সবচেয়ে দ্রুতগতির বোলারদের একজন উড। কিন্তু ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময় ইনজুুরির সাথে লড়াই করেছেন তিনি। বিশেষ করে গোড়ালির ইনজুরি কারনে নিজেকে ফিট রাখতে পারেননি এই ডান-হাতি পেসার।
ফিটনেস সমস্যা এতটাই প্রখর ছিলো যে, ২০১৫ সালে টেস্ট অভিষেকের পর ইল্যান্ডের ১০৯ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ২৯টিতে খেলতে পেরেছেন উড। তারপরও অ্যাশেজের শেষ দুই টেস্টে খেলার ব্যাপারে আত্মবিশ^াসী উড। যদিও সিরিজের চতুর্থ এবং পঞ্চম টেস্টের মধ্যে মাত্র তিন দিনের বিরতি থাকছে।
তিনি বলেন, ‘গতবার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে চারটি টেস্ট খেলেছিলাম এবং এর মধ্যে টানা তিনটি টেস্ট ছিল। এটি অনেক বড় একটিন ব্যপার। আমি আগে করেছি বলেই অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে আবারও সেটি করার চেষ্টা করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে, দীর্ঘ সময় পর এটিই আমার প্রথম ম্যাচ ছিলো।
আমি শরীরকে প্রস্তুত হবার সুযোগ দেবো। নিজেকে একটি ভাল জায়গায় নিয়ে যাবো। ক্ষতগুলো সেরে উঠতে দেবো এবং নিজেকে পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করবো।’
টেস্টর বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লিডস টেস্টে নিজের পারফরমেন্সের জন্য গর্বিত উড।
তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভালো করতে পেরেছি এটি বলতে আমি গর্বিত হই। এটি চ্যালেঞ্জিং, কেননা তারা বিশে^র শীর্ষ পর্যায়ের দল। এটি আমার সেরা অনুভূতিগুলির মধ্যে একটি।’
অস্ট্রেলিয়ার প্যাট কামিন্স এবং মিচেল স্টার্কের মুখোমুখি হওয়াটাও বেশ কঠিন বলে জানালেন উড, ‘কামিন্স-স্টার্ককে মুখোমুখি হয়ে দেখুন, এক, এটা সহজ নয়। দুই, এটি সত্যিই ভয়ানক।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা দ্রুত গতিতে বোলিং করছে, তারা ভাল বাউন্সার পাচ্ছে এবং তারা এমনটিতেই সেরা হয়ে উঠেনি।’
শৈশবের অ্যাশেজ স্মৃতি রোমন্থন করে উড বলেন, ‘২০০৫ সালের অ্যাশেজ (ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল) ছিল আমার জন্য পরম পাওয়া। আমি ছিলাম বয়সে ছোট ছিলাম, একজন কিশোর এবং আমার শহরের নায়ক (সতীর্থ ফাস্ট বোলার স্টিভ হারমিসন) খেলছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি না, এটা সেই মাত্রার।
তবে সমর্থন পাওয়াটা দুর্দান্ত। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আপনি অনুভব করেন, মানুষ আপনাকে বার্তা পাঠাচ্ছে। একটি জাতি হিসাবে এটি বিস্ময়কর, আমরা সমর্থনের ওজন বহন করতে পারি।’ আগামী ১৯ জুলাই থেকে ম্যানচেষ্টারে শুরু হবে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।