জুমবাংলা ডেস্ক : বীরশ্রেষ্ঠরা জাতির গর্ব ও অহংকার।দেশের সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র একজন মতিউর রহমান। ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি দেশের জন্য বীরের মতো লড়তে লড়তে শহিদ হন।
বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের ৫২তম শাহাদাত বার্ষিকী আজ। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসামান্য। অসম সাহসিকতার জন্য তিনি এ দেশের মানুষের মনে চির স্মরণীয় হয়ে আছেন।
১৯৭১ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে মতিউর সপরিবারে দুই মাসের ছুটিতে করাচি থেকে ঢাকা আসেন। ২৫ মার্চের কালরাতে মতিউর ছিলেন রায়পুরের রামনগর গ্রামে। পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একজন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট হয়েও অসীম ঝুঁকি ও সাহসিকতার সঙ্গে ভৈরবে একটি ট্রেনিং ক্যাম্প খুলে বাঙালি যুবকদের প্রশিক্ষণ দেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা অস্ত্র দিয়ে গড়ে তোলেন প্রতিরোধ বাহিনী। পরে তিনি দৌলতকান্দিতে জনসভা করেন এবং বিরাট মিছিল নিয়ে ভৈরব বাজারে যান। পাকসেনারা ভৈরব আক্রমণ করলে বেঙ্গল রেজিমেন্টে ইপিআর-এর সঙ্গে থেকে প্রতিরোধ ব্যূহ তৈরি করেন। এর পরই কর্মস্থলে ফিরে গিয়ে জঙ্গিবিমান দখল এবং সেটা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
মতিউর সবচেয়ে দুঃসাহসিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করেন একাত্তরের ২০ আগস্ট। এইদিন সকালে করাচির মৌরিপুর বিমানঘাঁটিতে তারই এক ছাত্র রশীদ মিনহাজের কাছ থেকে একটি জঙ্গিবিমান ছিনতাই করেন। কিন্তু রশীদ এ ঘটনা কন্ট্রোল টাওয়ারে জানিয়ে দিলে, অপর চারটি জঙ্গিবিমান মতিউরের বিমানকে ধাওয়া করে। এ সময় রশীদের সঙ্গে মতিউরের ধ্বস্তাধস্তি চলতে থাকে এবং একপর্যায়ে রশীদ ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়েন এবং বিমান উড্ডয়নের উচ্চতা কম থাকায় রশীদসহ বিমানটি ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে থাট্টা এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। মতিউরের সঙ্গে প্যারাসুট না থাকায় তিনি নিহত হন।
তার মৃতদেহ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা মাইল দূরে পাওয়া যায়। সেখান থেকে করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের অসীম সাহসিকতা, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের মূল্যায়নস্বরূপ তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ২০০৬ সালের ২৪ জুন তাকে শত্রুভূমি পাকিস্তান থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এনে স্বাধীন বাংলার মাটিতে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিক্ষেত্রে পুনরায় সমাহিত করা হয়।
মতিউর রহমানের জন্ম ১৯৪১ সালের ২৯ অক্টোবর । বাবা মৌলভী আবদুস সামাদ, মা সৈয়দা মোবারকুন্নেসা খাতুন। পৈতৃক নিবাস নরসিংদীতে হলেও জন্ম তার পুরনো ঢাকায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।