জুমবাংলা ডেস্ক : স্বাধীনতার ৫২ বছরে দেশ উন্নত হয়েছে সভ্যতা, সংস্কৃতি ও শিক্ষায়। প্রযুক্তিগত জ্ঞান বৃদ্ধির সাথে তাল মিলিয়ে জাতির মেরুদন্ডও আজ সমান শক্তিশালী। শিক্ষা ব্যবস্থায় যেমন এসেছে পরিবর্তন তেমন বেড়েছে মান। উচ্চ শিক্ষার মানদন্ড বৃদ্ধিতে যেমন ভূমিকা রাখছে দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। তেমনি সমানভাবে ভূমিকা রাখছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত দেশের বিভিন্ন কলেজগুলোও। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সর্বশেষ র্যাঙ্কিং (জাতীয়) নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে এবার থাকছে ঢাকা বিভাগের সেরা ১০টি কলেজের নাম-
১) ঢাকা কমার্স কলেজ
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের মিরপুরে অবস্থিত একটি উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতকোত্তর কলেজ। ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এটি ঢাকা মহানগরীর প্রথম কলেজ যা বাণিজ্য বিশেষায়িত। এই কলেজের মূল প্রতিষ্ঠাতা হলেন অধ্যাপক কাজী নুরুল ইসলাম ফারুকী। প্রশাসনিক কার্যক্রম চালানোর জন্য কলেজটিতে ১১ ও ১২ তলা বিশিষ্ট ২টি সুবৃহৎ ভবন রয়েছে। এর মধ্যে ১১তলা ভবনটি ৫০ ও ১২তলা ভবনটি ৭০ কক্ষ বিশিষ্ট। ১১ অনুষদ বিশিষ্ট এই কলেজে বর্তমান শিক্ষার্থী প্রায় ৬ হাজার ৬০০ জন। এছাড়া রয়েছে ১১২জন শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আবু মাসুদ ও চেয়ারম্যান প্রফেসর শফিক আহমেদ সিদ্দিকী।
২) তেজগাঁও কলেজ
তেজগাঁও কলেজ ফার্মগেটে অবস্থিত একটি বেসরকারি কলেজ। কলেজটির স্থাপনকাল ১৯৬১ সাল। তেজগাঁও কলেজটি নিজস্ব একটি আটতলা(বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান প্রফেশনাল ভবন),তিনটি সাততলা, একটি ছয়তলা ও দুটি চারতলাবিশিষ্ট ভবন নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তেজগাঁও কলেজে বিজ্ঞান,সামাজিক বিজ্ঞান,কলা এবং ব্যবসায় শিক্ষা ও প্রফেশনাল কোর্সের ২৯টি আলাদা আলাদা বিষয়ে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষা পরিচালনা করে আসছে। কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-অর-রশিদ। ৪৫০ জন শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ নিয়ে কলজটি বেশ সাফল্যের সাথে সাথে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
৩) লালমাটিয়া মহিলা কলেজ
১৯৬৬ সালে মাত্র ২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ১২ বিঘা জমির ওপর যাত্রা শুরু করে লালমাটিয়া মহিলা কলেজ।কলেজের এক স্মরণিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল লালমাটিয়া কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির উদ্যোগে। সোসাইটির টাকা, নিজেদের ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং বিত্তবান ব্যক্তিদের সহায়তায় কলেজটি দাঁড়িয়ে গেছে। এখন এর শিক্ষার্থী প্রায় সাত হাজার ও শিক্ষক ১৩১ জন। এই কলেজে রয়েছে ১১টি অনুষদ।
৪) আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ
প্রায় ১০ একরের উপর স্থাপিত আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত একটি স্বনামধন্য উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত। ইংল্যান্ডের আদি পাবলিক স্কুল ‘ইটন’ ও ‘হ্যারো’ এর আদর্শে এটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কলেজটি মূলত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের জন্য হলেও বেসামরিক ব্যক্তিবর্গের সন্তানরাও এতে পড়াশোনা করতে পারে। কলেজটিতে রয়েছে একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি বিজ্ঞান ভবন, একটি গ্রন্থাগার ভবন, একটি বিবিএ ভবন, একটি মাস্টার্স ভবন, একটি খেলার মাঠ, একটি মসজিদ, একটি বাগান, একটি ক্যাফেটেরিয়া, একটি শহীদ মিনার ও একটি মঞ্চ (শহীদ রুমী মঞ্চ)। কলেজটি রয়েছে ১০৪ জন প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ ১০০ জন (স্থায়ী) ও ১৬ জন (অস্থায়ী) সহ প্রায় ৬৫০০ শিক্ষার্থী। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে।
৫) হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ
হাবীবুল্লাহ্ বাহার কলেজ ঢাকার শান্তিনগরে অবস্থিত একটি বেসরকারী স্নাতক কলেজ। সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রী মরহুম হাবিবুল্লাহ্ বাহার সাহেবের স্ত্রী আনোয়ারা বাহার চৌধুরী ১৯৬৯ সালে এই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এই কলেজে উচ্চ-মাধ্যমিক (বিজ্ঞান, মানবিক, ও ব্যবসায় শিক্ষা), স্নাতক (পাস) কোর্স ও ২৩ টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং ৯টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল সহ মোট ৪টি বিষয়ে প্রফেশনাল সম্মান কোর্স চালু আছে। কলেজটি এক একর ভূমির উপর অবস্থিত। বর্তমানে এখানে একটি ১২ তলা ভবন, একটি ৮ তলা ভবন, দুইটি পাঁচ তলা ভবন ও একটি ২ তলা ভবন রয়েছে।এই কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর রাকিবুল হাসান।
৬) সিদ্ধেশ্বরী কলেজ
১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যবাহী সিদ্ধেশ্বরী কলেজটি ঢাকা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র রমনা থানার অধীনে শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়কে অবস্থিত। বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দশ হাজার। ১৯৭০ সালে সিদ্ধেশ্বরী কলেজটি ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়ে দিবা শাখাতে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজে বর্তমানে ১৭টি বিষয়ে অনার্স কোর্স, ২টি বিষয়ে প্রফেশনাল কোর্স, ১টি বিষয়ে ডিপ্লোমা কোর্স, ১১টি বিষয়ে মাস্টার্স শেষপর্ব এবং ৭টি বিষয়ে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে। ডিগ্রি (পাস) কোর্সে বিএ, বিএসএস ও বিবিএস শ্রেণিতে পাঠদান করা হয়। ঢাকা বোর্ডের অধীনে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় আসন সংখ্যা ৭০০টি ।
৭) সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ
১৯৬৬ সালে ২.৬০ একর জমির উপর স্থাপিত হয় এই কলেজ। বর্তমানে এই গার্লস কলেজটি ৬ হাজার ১৮৫ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছ। এছাড়াও রয়েছে প্রায় ১২১ জন শিক্ষক। কলেজটির স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের মোট ১৬টি অনুষদ।
৮) সরকারি সা’দত কলেজ
সরকারি সা’দত কলেজ, বাংলাদেশের টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়ায় অবস্থিত ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। অবিভক্ত বাংলায় মুসলমানদের প্রতিষ্ঠিত প্রথম কলেজ এটি। বর্তমানে সরকারি সা’দত কলেজ এ প্রায় ১২০ জন শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ ও ৩০ হাজার শিক্ষার্থী অনার্স (সম্মান) ও পাস কোর্স সহ মাষ্টার্স এ অধ্যয়নরত আছে। বর্তমানে ১৮টি বিষয়ে অনার্স ও ১২টি বিষয়ে মাষ্টার্স কোর্স চালু আছে। ৩৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ জন্ম লগ্ন থেকেই বাংলাদেশের শিক্ষা উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক অনন্য অবদান রেখে চলেছে।
৯) সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ
দক্ষিণ বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ১৯১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শাখা পদ্মা নদীর পশ্চিম প্রান্তে মোট প্রায় ৫৪.০১ একর জায়গা নিয়ে গড়ে উঠেছে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের মূল ক্যাম্পাস। একটি ফরিদপুর শহরের মধ্যেই ফরিদপুর স্টেডিয়াম এর পাশে অবস্থিত। ২টি ক্যাম্পাসে বিভক্ত এ কলেজটির একটিকে ডিগ্রি শাখা বা শহর শাখা ও অন্যটিকে অনার্স শাখা বা বায়তুল-আমান শাখা বলা হয়ে থাকে। ১৯৭১-১৯৭২ সালে কলেজটি প্রথম ৬টি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স চালু করে। বর্তমানে ১৯টি বিষয় অনার্স ও মাস্টার্স চালু করা হয়। কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর শ্রী অসীম কুমার সাহা।
১০) সরকারি তোলারাম কলেজ
সরকারি তোলারাম কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান; যেটি ১৯৩৭ সালে নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ১৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। কলেজটিতে রয়েছে প্রায় দু’শতাধিক শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ ও শতাধিক প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ। নারায়ণগঞ্জের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ খগেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী তোলারাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস শুরু করেছিলেন। বর্তমানে এর শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। কলেজটির বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর অধ্যাপক বেলা রানী সিংহ। সূত্র : দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।