আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বর্তমান বিশ্বে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। শত্রু দেশের ড্রোন, ফাইটার জেট, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল থেকে নিজস্ব আকাশসীমা রক্ষায় এসব আধুনিক প্রযুক্তির বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত পাকিস্তানের সীমান্তে হামলা প্রতিহত করতে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ, বারাক-৮, আকাশ মিসাইল ও ড্রোন-বিরোধী প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেখে নেওয়া যাক বর্তমানে ব্যবহৃত বিশ্বের সেরা পাঁচটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এবং তাদের বৈশিষ্ট্য।
১. এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ (রাশিয়া)
রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ হলো বিশ্বের অন্যতম উন্নত দূরপাল্লার বিমান ও মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এটি স্টেলথ ফাইটার, বোমারু বিমান, ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং ড্রোন ধ্বংসে সক্ষম। এর দুটি অত্যাধুনিক রাডার রয়েছে, যা ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ৮০টি লক্ষ্যবস্তু একসঙ্গে শনাক্ত করতে পারে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- ৬০০ কিমি পর্যন্ত শনাক্তকরণ ক্ষমতা
- ১৫ মিনিটে মোতায়েন ও ৩ মিনিটে প্রস্তুত
- জ্যামার-প্রতিরোধী প্যানোরামিক রাডার সিস্টেম
- বিভিন্ন ধরনের মিসাইল উৎক্ষেপণ সক্ষমতা
ব্যবহারকারী দেশ:
ভারত, রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, বেলারুশ।
২. থাড (THAAD) – থার্মাল হাই অল্টিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (আমেরিকা)
THAAD হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি উন্নত মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা টার্মিনাল পর্যায়ে incoming ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়। এটি ২০০ কিমি পর্যন্ত দূরত্ব এবং ১৫০ কিমি উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- মাক-৮ গতিতে লক্ষ্যভেদ
- টার্মিনাল ফেজ ইন্টারসেপ্ট ক্ষমতা
- দ্রুতগতির লক্ষ্যবস্তুকে সঠিকভাবে শনাক্ত করার প্রযুক্তি
ব্যবহারকারী দেশ:
আমেরিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, দক্ষিণ কোরিয়া।
৩. ডেভিড’স স্লিং (ইজরায়েল/আমেরিকা)
ইজরায়েল ও আমেরিকার যৌথভাবে তৈরি ‘ডেভিড’স স্লিং’, যা ম্যাজিক ওয়ান্ড নামেও পরিচিত, মাঝারি ও দূরপাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি ব্যালিস্টিক মিসাইল, ক্রুজ মিসাইল, ড্রোন এবং শত্রু বিমানের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা গড়ে তুলতে সক্ষম।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- মাঝারি ও দূরপাল্লার সুরক্ষা
- ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল প্রতিহত করার ক্ষমতা
- ড্রোন এবং শত্রু বিমান ধ্বংসে দক্ষ
ব্যবহারকারী দেশ:
ইজরায়েল (মূল ব্যবহাকারী)।
৪. প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩ (আমেরিকা)
প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যা ১৬০-১৭০ কিমি পর্যন্ত পাল্লায় কাজ করে। এটি বিমান, ক্রুজ মিসাইল এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। উপসাগরীয় যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধ এবং ইউক্রেন সংকটেও এই ব্যবস্থা কার্যকরভাবে ব্যবহার হয়েছে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- ১৬০-১৭০ কিমি পর্যন্ত আঘাত হানার ক্ষমতা
- ২৪ কিমি উচ্চতায় লক্ষ্য শনাক্তকরণ
- বিমান, ক্রুজ ও ট্যাকটিক্যাল ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংসে সক্ষম
ব্যবহারকারী দেশ:
আমেরিকা, জাপান, সৌদি আরবসহ ১৭টিরও বেশি দেশ।
৫. এস-৩০০ ভিএম / আন্তে-২৫০০ (রাশিয়া)
রাশিয়ার তৈরি এস-৩০০ভিএম / আন্তে-২৫০০ হলো একটি দূরপাল্লার এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, যা বিমান, ক্রুজ মিসাইল এবং ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়। এটি ২৫০ কিমি পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এবং ৩০ কিমি উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
- ২৫০ কিমি পর্যন্ত আঘাতের পাল্লা
- বিমান ও বিভিন্ন মিসাইল প্রতিরোধের দক্ষতা
- স্বল্প ও মধ্যম পাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল প্রতিহত করার ক্ষমতা
Vivo Y300 GT : শক্তিশালী ব্যাটারি ও উচ্চ রিফ্রেশ রেট ডিসপ্লে সহ এক অসাধারণ স্মার্টফোন
ব্যবহারকারী দেশ:
রাশিয়া, ভেনেজুয়েলা, মিশর।
বর্তমান সময়ে আকাশ প্রতিরক্ষায় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এস-৪০০, থাড, ডেভিড’স স্লিং, প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩ এবং এস-৩০০ভিএম — এই পাঁচটি ব্যবস্থাই বিশ্বে নিজ নিজ ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের গুরুত্ব আরও বাড়বে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।