জুমবাংলা ডেস্ক : কাঁদা ছোড়া বন্ধ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এটা স্বাধীনতার জন্য শুভ নয়। তাই আহ্বান জানাতে চাই- কাদা ছোড়াছুড়ি, তর্ক-বিতর্ক না করে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। এর মাধ্যমে আমরা একটি কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক জায়গায় পৌঁছাতে পারব।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত শোক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র- জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাতে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেম বাংলাদেশে নতুন করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অথচ সেই সুযোগকে আবার ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।
শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে থেকে ছাত্র-জনতার বিজয়ের ফলাফলকে নষ্ট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। নৈরাজ্য সৃষ্টি করে দেশটাকে অচল করে দেওয়ার ছক কষছেন।
মির্জা ফখরুল শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কিছু সংখ্যক মানুষ অন্যায়ভাবে দেশের মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তোলার চেষ্টা করছে। দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। যা কোনোভাবেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং দেশের স্থিতিশীলতার জন্য শুভ নয়।
তিনি বলেন, এই অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আসা একটি সরকার। প্রায় দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর দিয়ে এই সরকার গঠন হয়েছে। আমরা বারবার করে বলছি, দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হলে কোনোমতেই স্থিতিশীলতা আসবেনা। সেজন্য প্রথম থেকেই বলছি, প্রকৃতপক্ষে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা এর জন্য আন্দোলন করছি দীর্ঘদিন ধরে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানের প্রতি এই আহ্বান জানাতে চাই, আপনি শক্ত হাতে আপনার সরকার পরিচালনা করুন। কেউ যেন এই কথা না বলে, আপনি পক্ষপাতিত্ব করছেন। আমরা এ কথা শুনতে চাই না। কারণ, আপনি অত্যন্ত প্রতিষ্ঠিত ও বিখ্যাত মানুষ। সারাবিশ্বে আপনার নাম আছে। আপনি সেটার মর্যাদা রাখবেন আমরা তা বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, আপনার কাছে আমাদের প্রত্যাশা- সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যত দ্রুত সম্ভব ন্যূনতম সংস্কার শেষ তরে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যান। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরে আসুক।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে বিএনপির সমালোচনা করে বলার চেষ্টা করছে আমরা নাকি শুধু নির্বাচন নির্বাচন করছি। আমরা নাকি সংস্কার চাই না। এত বড় মিথ্যা কথা, মিথ্যা প্রচারণা তারা চালাচ্ছে বিভিন্নভাবে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায়। কয়েকজন মানুষ, গুটিকতক মানুষ বিএনপিকে টার্গেট করেছে। তারা অপপ্রচারণা করে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যখন পুরো জাতি কিংকর্তব্যবিমূঢ়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন আক্রমণ করেছে, গণহত্যা চালাচ্ছে, তখন সেনাবাহিনীর একজন অখ্যাত মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করে পুরো জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। এবার ছাত্র-জনতার আন্দোলনেও সেনাবাহিনী দেশপ্রেমিক বাহিনীর ভূমিকা পালন করেছে।
আলোচনা সভায় তৎকালীন র্যাব-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুজ্জামান খান, তৎকালীন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল প্রয়াত শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন আহমেদ ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাৎ ও যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।