জুমবাংলা ডেস্ক : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় এক কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই করে তরমুজ লুটপাটের অভিযোগে নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সাইফুল ইসলামের বাবা এনায়েত হোসেন খান নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগ রয়েছে, সাইফুলের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত তেঁতুলিয়া নদীর চর রায় সাহেব পয়েন্ট থেকে ৮৬০ পিস তরমুজভর্তি একটি ট্রলার ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী (৪৫) বাদী হয়ে সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাউফল থানায় মামলা করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাইফুল ইসলামকে, পাশাপাশি তার বাবা এনায়েত হোসেন খানকেও (৫৮) আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষক মানিক ব্যাপারী গত মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) তার ক্ষেত থেকে ৮৬০ পিস তরমুজ সংগ্রহ করে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশালে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে এনায়েত হোসেন খানের ছেলে সাইফুল ইসলাম তার দলবল নিয়ে ট্রলারের চালক মো. আরিফকে (১৮) মারধর করেন এবং চর রায় সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইতে গেলে সাইফুল ও তার সহযোগীরা তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তরমুজগুলো অন্য একটি ট্রলারে তুলে নিয়ে যায়। পরে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে খালি ট্রলারটি ফেরত দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী কৃষক মানিক ব্যাপারী অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় মামলা করলে বা কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবদল নেতা জানান, সাইফুল ইসলাম ও তার বাবা এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বাংলাবাজার অটোগাড়ির স্ট্যান্ডের ইজারা দখল করে তারা অবৈধভাবে টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও নিমদী খেয়াঘাটের ইজারাদারের টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাতেও তাদের সম্পৃক্ততার কথা শোনা যাচ্ছে। এর আগে সাইফুলকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাইফুল ইসলাম গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাজিরপুর ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেছেন। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও তার গ্রেপ্তারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন, কারণ তার কর্মকাণ্ডে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছিল।
এ বিষয়ে নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ বিষয়ে আমার বক্তব্য আছে কিন্তু আজকে বক্তব্য দেব না। প্রেস কনফারেন্স করব ,সংবাদ সম্মেলন করব,মানববন্ধন করব , সবকিছুই করব। আমাকে একটু সময় দেন ।
বাউফল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রকৃত যে ঘটনা পেয়েছি ,সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। সেই অভিযোগ অনুযায়ী মামলা হয়েছে। আমরা আসামিকে গ্রেপ্তার করেছি। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, সে যে দলেরই হোক আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।