আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের একদল যুবক সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। ভারত সরকারের কাছে অভিযোগ জানিয়ে তারা বলেন – রাশিয়ায় বেড়াতে এসেছিলেন। কিন্তু তাদের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে তারা দ্বারস্থ হয়েছেন মোদি সরকারের।
১০৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন ওই সাত পাঞ্জাবি। তাদের পরনে সেনার জ্যাকেট ও হুড এবং সঙ্গে স্কাল ক্যাপ। একটি ছোট্ট নোংরা ঘরের ভিতরে তারা দাঁড়িয়ে। ঘরের একপ্রান্তে একটি মাত্র জানালা। তাদের মধ্যে ছয়জন ঘরের এক কোণে বসে ছিল। সপ্তমজন হরিয়ানার কারনালের ১৯ বছর বয়সী হর্ষ – তাদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে এবং সাহায্যের জন্য অনুরোধ করে একটি ভিডিও বার্তা রেকর্ড করেছেন।
নিজেদের পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করতে গিয়ে হর্ষ বলেন- গত ২৭ ডিসেম্বর তারা রাশিয়ায় আসেন। তাদের ভিসা ছিল ৯০ দিনের। সেখান থেকে প্রতিবেশী দেশ বেলারুশে যাওয়ার কথা। কিন্তু তাদের এজেন্ট চম্পট দিলে তারা অসহায় পরিস্থিতিতে পড়েন। অভিযোগ, পুলিশ ওই পর্যটকদের গ্রেপ্তার করে জোর করে নথিতে সই করতে বাধ্য করে। হর্ষের কথায়, এখন ওরা (রাশিয়া) আমাদের বাধ্য করছে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে।
হর্ষের পরিবার এনডিটিভিকে বলেছে যে তাদের ছেলে বিদেশে চাকরি করতে চেয়েছিল, এবং তাকে বলা হয়েছিল যে রাশিয়ায় কাজ হয়ে গেলে তার পছন্দের দেশে অভিবাসন করা সহজ হবে। হর্ষের মা দাবি করেছেন, আমার ছেলে ২৩ ডিসেম্বর বিদেশে গিয়েছিল। সে কাজের সন্ধানে গিয়েছিল এবং রাশিয়ায় তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়া হয়েছিল। রাশিয়ান সৈন্যরা তাদের ধরে ১০ বছরের জেলের হুমকি দিয়েছিল এবং সেনাবাহিনীতে তাদের জোর করে নিয়োগ দেয়া হয় । আমার ছেলেকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ”মোদি সরকারের কাছে তার কাতর আর্জি যাতে তার ছেলেকে রাশিয়া থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। ভিডিওতে থাকা অন্য একজন গুরপ্রীত সিং, যার পরিবারও সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে। গুরপ্রীতের ভাই অমৃত সিং এনডিটিভিকে বলেন, ওই ব্যক্তিদের সামরিক চাকরিতে যোগদানে বাধ্য করা হয়েছে। “বেলারুশে যে নথিতে তারা স্বাক্ষর করেছিল তা রাশিয়ান ভাষায় হওয়ায় তারা বিষয়টি প্রথমে বুঝতে পারেনি। এতে বলা হয়েছে যে তারা সেনাবাহিনীতে যোগ না দিলে ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। বেলারুশ – রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য রাশিয়ার উপর নির্ভরশীল – এটিকে মস্কোর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসাবে দেখা হয়।
ক্রেমলিন ইউক্রেন আক্রমণের জন্য একটি মঞ্চের স্থল হিসাবে তার অঞ্চল ব্যবহার করেছিল। তারপর থেকে, নিয়মিত যৌথ সামরিক মহড়া উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গত সপ্তাহে, ভারতের বিদেশ মন্ত্রক বলেছে যে তারা একইভাবে রাশিয়ায় আটকে পড়া অন্যদের সাথে যোগাযোগ করছে, যাদের মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরের ৩১ বছর বয়সী আজাদ ইউসুফ কুমার রয়েছেন।কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা এবং উত্তর প্রদেশ থেকে – অন্তত ১০ জন ভারতীয় – একই রকম যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতিতে দিন কাটাচ্ছেন। গত মাসে ভারত সরকার বলেছে যে তারা সচেতন যে কিছু ভারতীয় ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে আটকে পড়েছে। তাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলেই জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
সূত্র : এনডিটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।