জুমবাংলা ডেস্ক : টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী তিন দিনব্যাপী জামাইমেলা শেষ হবে আজ বৃহস্পতিবার। যুগ যুগ ধরে চলে আসা সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির প্রাণ। তারই ধারাবাহিকতায় শত বছর ধরে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘জামাইমেলা’। এ মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দূর-দূরান্ত থেকে জামাইরা আসেন এ মেলায়। মেলা সামনে রেখে ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য আয়োজন করা হয় নানা বিনোদনের ব্যবস্থার। মেলায় থাকে ছোট-বড় প্রচুর স্টল, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, খাবারের দোকান। ঐতিহ্যবাহী এই মেলায় ব্যবসা করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন ব্যবসায়ীরা।
প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে) টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার রসুলপুর বাছিরন নেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজন করা হয় এই মেলার। তিন দিনে রসলপুরসহ আশপাশের অন্তত ২৫-৩০টি গ্রামের লাখো মানুষের সমাগম ঘটে এই মেলায়।
সোলায়মান হোসেন (৬০) নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই আমি এ মেলা দেখে আসছি। এটি জামাইমেলা হিসেবে অনেক পরিচিত। শ্বশুররা এ মেলা উপলক্ষে জামাইদের টাকা দেন, আর জামাইরা এর সঙ্গে টাকা যোগ করে মেলা থেকে বিভিন্ন কিছু কেনেন। আমার একটি মেয়ে রয়েছে, তাকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ের জামাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। তিনি এখানে এসেছেন।’
রসুলপুরের হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এক মাস ধরে এই মেলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। লোকজন ছুটি নিয়ে মেলা দেখার জন্য আসেন। আগে বয়স্ক লোকজন এই মেলা উপভোগ করতেন। এখন মধ্যবয়স্ক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা এই মেলা বেশি উপভোগ করেন। মেলায় মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়।’
ফার্নিচার ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি এই মেলায় প্রায় ১৫ বছর ধরে আসছি। এখানে বিক্রি করে আমি লাভবান হই। এই মেলাটি জামাইমেলা হিসেবে পরিচিত।
কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাশেদ রহমান বলেন, ‘আমাদের এ মেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে তিন শতাধিক দোকান বসে। এই মেলা টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মেলা। মেলায় শুরু হওয়ার আগেই গ্রামের জামাই এবং বউয়েরা আসেন। তারা বিভিন্নভাবে মেলা উপভোগ করে থাকেন।’
মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আবুল হাসেম বলেন, ‘এই মেলা টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী। যার সুনাম সারা দেশেই ছড়িয়ে আছে। মেলা শুরু হওয়ার আগেই রসুলপুরসহ আশপাশের কমপক্ষে ৩০ গ্রামের জামাই এবং বউয়েরা আসেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।