জুমবাংলা ডেস্ক : ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিস্থ আফরোজা ছাত্রী হোস্টেলের পরিচালক আফরোজা মীম ১৫ দিনের কন্যা সন্তান রেখে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে হোস্টেলের বোর্ডারসহ বিভিন্নজনের নিকট থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় হোস্টেলের পরিচালক। এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। মীম অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায় তার হোস্টেলের বোর্ডারদের দেয়া তথ্যানুযায়ী।
মধুখালি উপজেলার আড়পারা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বদিউজ্জামাল বাবু মীমের আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, শনিবার রাতে মীম চট্টগ্রামের কোনো এক বন্ধুর বাসায় বিষপানে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রোববার রাতে তার মৃত্যু হয়। সোমবার বাদ মাগরিব মীমের নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। তবে পত্রপত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি মীম প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে কথা উধাও হন।
তবে চেয়ারম্যান তার মৃত্যুর কারণ, কোন স্থান থেকে বিষপান করেন এবং কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এ সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।
এদিকে, দুদিন আগে মীম তার স্বামী মোহাম্মদ সাব্বিরের ফেসবুক আইডি থেকে কান্না জড়িত কণ্ঠে দেড় ঘণ্টার একটি লাইভ করেন। সেখানে তিনি আত্মহত্যা করবেন সে বিষয়টিও বলেন। তিনি লাইভে অনেক টাকা দেনা হয়েছেন সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে জানতে স্বামী মোহাম্মদ সাব্বিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।
মীমের আপন ফুপু সাহানা বেগম বলেন, মীমের ১৫ দিন বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কন্যাটিকে মায়ের আদর বঞ্চিত করলো। আমার মেয়ে আশার কাছ থেকেও মীম ৩ লাখ টাকা লোন নেন। তিন দিন আগে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিতে তার বাসায় টাকা আনতে গিয়ে শুনি মীম তার পরিবার নিয়ে পালিয়েছে। মীম সেখানে একটি মহিলা হোস্টেল পরিচালনা করতেন। সেখানেও নাকি সে প্রায় ৫০ লাখ টাকা দেনা রেখে উধাও হন।
উল্লেখ্য, ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলিস্থ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সামনে সুফিয়া বেগমের মালিকানাধীন ১১ তলাবিশিষ্ট রহমত টাওয়ারের ছয়টি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে আফসানা ছাত্রী হোস্টেল নামে ওই মেসটি চালু করেন মধুখালি উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মামুন মোল্লার মেয়ে আফসানা মীম। ৬টি ফ্লাটের বিভিন্ন কক্ষে প্রায় ১২০ জন ছাত্রী রয়েছেন। একই বিল্ডিংয়ের আরেকটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে স্বামী ইমামুজ্জামান মিয়া ওরফে সাব্বিরকে নিয়ে সপরিবারে সেখানে থাকতেন তিনি। মাত্র ১৫ দিন আগে শহরের একটি হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন মীম।
হোস্টেলের ছাত্রীরা জানান, বুধবার ভোরে হঠাৎ একটি হলুদ পিকআপ ও দুটি ভ্যান যোগে তার পরিবারের সব মালামাল নিয়ে উধাও হয়ে যান মীম। তার আগে মঙ্গলবার রাতে মীম ওই হোস্টেলের সকল ছাত্রীদের কারো নিকট থেকে ১ হাজার, আবার কারো নিকট থেকে ২ হাজার টাকা করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করেন। তারপর ভোরের দিকে লাপাত্তা হয়ে যায় বলে জানান হোস্টেলের ছাত্রীরা। একাধিক ছাত্রী বলেন, অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে মীম প্রায় ৫০ লাখ টাকা দেনা হয়ে পড়েন। তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাদের নিকট থেকেও টাকা নিয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।