জুমবাংলা ডেস্ক : সাগরে পাঁচ দিন ধরে ভাসছিল ট্রলার, আশপাশে ছিল না অন্য কোনো ট্রলার। ছিল না মোবাইল নেটওয়ার্কও। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়া ভোলা মনপুরা এলাকার এমন ১৯ জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার থেকে প্রায় ২৩ নটিক্যাল দূরের গভীর সাগর থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
জেলেরা বলছেন, নতুনভাবে জীবন ফিরে পেয়েছেন তারা। আর ট্রলারটিতে জিপিএস ডিভাইস না থাকায় অবস্থান শনাক্তের পাশাপাশি ২৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে কোস্টগার্ড।
গত ২৩ এপ্রিল ভোলা জেলার মনপুরা এলাকা থেকে ১৯ জন মাঝিমাল্লা নিয়ে এফবি সজীব-১ নামক একটি ফিশিং ট্রলার মাছ ধরার উদ্দেশে সমুদ্রে গমন করে। এক পর্যায়ে মাছ ধরতে ধরতে গত ২৫ এপ্রিল ট্রলারটি পাখা ভেঙে সাগরজলে পড়ে। এরপর থেকে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গভীর সমুদ্রে ভাসতে থাকে।
এফবি সজীব-১ ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ জসিম বলেন, চারদিকে পানি আর পানি, গভীর সাগর থেকে কূল-কিনারা দেখা যাচ্ছিল না। ছিল না অন্য কোনো মাছ ধরার ট্রলার। নেই মোবাইলের নেটওয়ার্কও। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলারের পাখা ভেঙে পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে বিকল হয়ে যায়। এরপর থেকে ৫ দিন ধরে ট্রলারসহ আমরা ১৯ জন জেলে গভীর সাগরে ভাসতে থাকি। হুট করে ৫ দিন পর ভাসতে ভাসতে মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আসি। এরপর ৯৯৯ কল দিয়ে জীবন বাঁচাতে আকুতি জানায়।
আরেক জেলে মোহাম্মদ মাফর বলেন, একদিন দুদিন করে ৫ দিন সাগরে ভাসতে ভাসতে মনে ভয় চলে এসেছিল। সাগরে কোন জায়গা আছি, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। মোবাইলের নেটওয়ার্কও ছিল না। কোনো ট্রলার ছিল না যে উদ্ধার করবে।
কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে উদ্ধারে নামে কোস্টগার্ড স্টেশন কক্সবাজার ও কোস্টগার্ডের নিয়মিত টহল দল। কিন্তু ট্রলারটিতে জিপিএস ডিভাইস না থাকায় অবস্থান শনাক্ত করতে করা যাচ্ছিল না। পরে সমুদ্র প্রহরায় নিয়োজিত কোস্টগার্ড জাহাজ মনসুর আলীর সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এরপর কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় ২৩ নটিক্যাল মাইল দূরে গভীর সাগর থেকে ট্রলারসহ ১৯ জেলেকে উদ্ধার করা হয়।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচ এম লুৎফুল লাহিল মাজিদ আরও বলেন, প্রায় ২৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ট্রলারসহ ১৯ জন জেলেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং খাবার সরবরাহ করা হয়। আর ৬ ঘণ্টা পর শনিবার বিকেল ৫টার দিকে ট্রলারসহ ১৯ জনকে কক্সবাজার উপকূলে ফিরিয়ে আনা হয়। ফিশিং ট্রলার মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় এবং জেলেদের মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।