জুমবাংলা ডেস্ক : টাকার সংকটে ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিচ্ছে সরকার। দুই বছর মেয়াদি বন্ডে প্রথমবারের মতো সুদহার ১১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। গতকাল বুধবার দুই বছরের জন্য সরকার ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ সুদে ১ হাজার ২৭৬ কোটি টাকা নিয়েছে। গত মাসেও একই মেয়াদে ঋণ নিয়েছিল ১০ দশমিক ২০ শতাংশ সুদে। ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো দুই বছর মেয়াদি বন্ড চালু হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালের মে মাসে দুই বছর মেয়াদি বন্ড চালুর মাসে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ সুদে লেনদেন হয়। চালুর পরের মাসে সুদহার বেড়ে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৯৮ শতাংশে ওঠে। এরপর কমতে কমতে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে এক অঙ্কের ঘরে তথা ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশে নামে। গত নভেম্বর থেকে আবার দুই অঙ্কে উঠেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আশানুরূপ রাজস্ব আদায় না হওয়ায় বিভিন্ন দেনা পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সার, জ্বালানি ও বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির টাকা পরিশোধ করতে না পেরে পাওনার বিপরীতে বন্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এতদিন সরকার টাকার সংকটে পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক সরাসরি ঋণ দিত। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এখন সরাসরি ঋণ না দিয়ে উল্টো কমানো হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ঋণ ২৭ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা কমেছে। একই সময়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকে বেড়েছে ৩১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা।
ব্যাংকাররা জানান, এখন বিনিয়োগে মন্থরগতিসহ বিভিন্ন কারণে ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ঋণ চাহিদা আছে তেমন না। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের সঞ্চয় প্রবণতা কমেছে। আবার ডলার সংকট মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে। চলতি অর্থবছর প্রায় ৭০০ কোটি ডলার বিক্রি করে ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি তোলা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ব্যাংকের প্রতি আস্থাহীনতার কারণে মানুষ টাকা তুলে নিয়েছে। আবার গত বছরের জুলাই থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ৯ শতাংশ সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা তুলে নতুন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সব মিলিয়ে সরকারের ঋণের সুদহার দ্রুত বাড়ছে। সুদহারের নতুন ব্যবস্থায় চলতি মাসে গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সুদহারেরর সীমা উঠেছে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে গত ২৬ ডিসেম্বরে ৩৬৪ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলে সর্বোচ্চ সুদ ওঠে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। যে কোনো মেয়াদের বিল-বন্ড মিলে গতকালের এ সুদহার ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। ওই মাসে ২০ বছর মেয়াদি বন্ডের লেনদেন হয়েছিল ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ সুদে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।