আন্তর্জাতিক ডেস্ক : হিন্দুদের দেবতা মা কালীকে নিয়ে ভারতের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যকে ঘিরে দেশটিতে বিতর্ক তুঙ্গে। তবে মহুয়ার মন্তব্যকে ব্যক্তিগত বলেছে তৃণমূল।
কানাডাপ্রবাসী লীনা মানিমেকালাইয়ের একটি তথ্যচিত্রের পোস্টারে দেখা গেছে, কালীরূপে এক নারী ধূমপান করছেন। সেই পোস্টার সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে মহুয়া বলেন, কালী মানে যিনি মাংস ভক্ষণ ও সুরা গ্রহণ করেন।
মহুয়ার এই মন্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। সামাজিক মাধ্যমে মহুয়ার মন্তব্য আলোড়ন তুলেছে। বিজেপি নেতারা সোচ্চার হয়েছেন।
তারপর মহুয়া টুইট করে বলেছেন, ‘সব সঙ্ঘীকে বলতে চাই, মিথ্যা বললে ভালো হিন্দু হওয়া যায় না। আমি কখনোই সিনেমার পোস্টার নিয়ে মন্তব্য করিনি বা ধূমপানের কোনো উল্লেখ করিনি। আমার প্রস্তাব হলো, আপনারা তারাপীঠে গিয়ে মা কালীর দর্শন করুন। দেখুন সেখানে কোন খাদ্য ও পানীয় মা-কে ভোগ দেয়া হচ্ছে। জয় মা তারা।’
কিন্তু এই বিতর্কে দল তার পাশে নেই। তৃণমূলের তরফ থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, তারা মহুয়ার মন্তব্যকে সমর্থনও করে না, মান্যতাও দেয় না।
মহুয়ার প্রতিক্রিয়া
দলের টুইটের পর মহুয়া একটা টুইট করে বলেছেন, ‘সত্যের জয় হবে’। তারপর তিনি তৃণমূলকে টুইটারে আনফলো করে দিয়েছেন। সেখানে তিনি এখন শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফলো করছেন। দলের মন্তব্যে তিনি যে খুশি নন, সেটা এভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ।
বিজেপি-র প্রতিক্রিয়া
রাজ্য বিজেপি নেতারা মহুয়াকে গ্রেপ্তার করার দাবি করেছেন। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার টুইট করে বলেছেন, ”সনাতন ধর্মে মা কালীকে অ্যালকোহল এবং মাংস ভক্ষণকারী দেবী রূপে উপাসনা করা হয় না। মা কালীকে হিন্দুরা যুগ যুগ ধরে অশুভ শক্তির বিনাশকারী শক্তির প্রতীক হিসাবে পুজো করছে। মহুয়াকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার মহুয়াকে গ্রেপ্তার করার জন্য রাজ্য সরকারকে দশদিন সময় দিয়েছেন। তারপর তিনি কোর্টে যাবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।
মহুয়ার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার দ্য ওয়ালকে বলেছেন, ”যারা চলচ্চিত্র নির্মাতার গ্রেপ্তারের দাবি করছে, তারা ইতিহাস জানে বলে মনে হয় না। মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্যে দেবদেবীদের নিয়ে অনেক রসিকতা, হাসিঠাট্টা রয়েছে।”
প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ”মহুয়া তো ভুল কিছু বলেননি। পশ্চিমবঙ্গের মন্দিরে তো এরকম ভোগ দেয়া হয়। তাছাড়া প্রণববাবুও সংসদে বলেছিলেন, চণ্ডীতে লেখা আছে মা দুর্গা অসুর নিধনের আগে সুরা পান করেছিলেন।” তিনি মনে করেন, ”এই সব বিতর্ক অর্থহীন।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।