ডনাল্ড ট্রাম্প তার অপ্রত্যাশিত কাজের জন্য বেশি পরিচিত। আর ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমেরিকান নেতা ঠিক তাই করেছেন। নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ শুরু করার জেরে দুই দেশের সম্পর্কের বেশ অবনতি ঘটেছে। এই পদক্ষেপ অনেক আমেরিকানকে ক্ষুব্ধ ও বিচলিত করেছে। কিছু ডেমোক্র্যাট মনে করেন যে, ভারতীয় আমদানির উপর ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক ‘আমেরিকানদের ক্ষতি করবে’ এবং ‘মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে নষ্ট করবে’।ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তারাও।
ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) জন বোল্টন বলেছেন যে, ট্রাম্প তার ‘বিপর্যয়কর’ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ভারতের সাথে কূটনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক জোরদার করার জন্য পশ্চিমাদের কয়েক দশকের প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দিয়েছেন।
একইসঙ্গে জো বাইডেন প্রশাসনে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী জ্যাক সুলিভানও ট্রাম্পের বাণিজ্য পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। সতর্ক করে বলেছেন যে, নয়া দিল্লিকে ওয়াশিংটনের কাছাকাছি আনার জন্য বছরের পর বছর ধরে করা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এর জেরে ভারত বেইজিংয়ের নিকটে চলে আসবে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ‘ট্রাম্প পরিবারের সাথে ব্যবসায়িক চুক্তিতে জড়িত হওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রতি আগ্রহের কারণে, ট্রাম্প ভারতের সম্পর্ককে একপাশে সরিয়ে রেখেছেন।
এটি একটি বড় কৌশলগত ধাক্কা কারণ একটি শক্তিশালী ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্ব আমাদের স্বার্থর জন্য জরুরি’। এর ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে: পাকিস্তানে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক স্বার্থ কী?
ট্রাম্প সম্পর্কে সুলিভান ঠিক কী বলেছেন?
সুলিভান, যিনি হোয়াইট হাউসের সাবেক কর্মকর্তা, দ্য বুলওয়ার্ক পডকাস্টে উপস্থিত হয়ে টিম মিলারকে বলেছিলেন যে, ভারতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের বিশাল শুল্ক আরোপ উদ্বেগের বিষয়। এমনকি আমেরিকান ব্র্যান্ডের সুনাম নষ্ট করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দোষারোপ করেছেন তিনি।
সুলিভান পডকাস্টে বলেন, ‘চীন অনেক দেশে জনপ্রিয়তার দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে গেছে, এবং এক বছর আগেও এমনটা ছিল না। অনেক দেশ মনে করছে চীন আরও দায়িত্বশীল খেলোয়াড়ের মতো আচরণ করছে।’
ভারতের উপর আরোপিত শুল্ক সম্পর্কে বিশেষভাবে বলতে গিয়ে সুলিভান আরও বলেন, “আমরা ভারতের সাথে আরও গভীর, টেকসই সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলাম, এবং চীনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে তা বড় আকার ধারণ করেছিল। এখন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে বিশাল বাণিজ্য আক্রমণ শানিয়েছেন।
ভারতীয়রা বলছেন, চীনাদের সাথে বসতে হবে কারণ আমেরিকার বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে সেখানে। ‘একটি পৃথক মেইডাসটাচ ইউটিউব চ্যানেলে, সুলিভান আরও অভিযোগ করেছেন যে, ট্রাম্প ভারতের সাথে অংশীদারিত্বকে পাশ কাটিয়ে গেছেন কারণ পাকিস্তান ট্রাম্প পরিবারের সাথে ব্যবসায়িক চুক্তিতে জড়িত হতে ইচ্ছুক।
উপস্থাপক যখন তাকে পাকিস্তানের সাথে ট্রাম্প পরিবারের বিটকয়েন ব্যবসা এবং ভারতে টিম কুকের অ্যাপল কারখানা সম্পর্কে প্রশ্ন করেন তখন তিনি এই প্রতিক্রিয়া জানান।
সুলিভানের দাবি, ট্রাম্প নীতি ভারতকে রাশিয়া থেকে দূরে সরিয়ে রাখার কয়েক দশকের প্রচেষ্টায় পানি ঢেলে দিয়েছে। এবং চীনকে ভূ-রাজনৈতিক সুবিধা করে দিয়েছে। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, রাশিয়া থেকে ভারতকে দূরে সরাতে বছরের পর বছর বিপুল অর্থ ব্যয় করেছে আমেরিকা।
সে সব নষ্ট করেছে ট্রাম্পের ভুল নীতি। তার দাবি, ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতকে চীন ও রাশিয়ার আরও কাছাকাছি এনে দিয়েছে। ট্রাম্পের নীতি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে পূর্ব এশিয়ার কূটনৈতিক পরিস্থিতিকে নিজের অনুকূলে আনার সুযোগ করে দিয়েছে।
সূত্র : ফার্স্টপোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।