জুমবাংলা ডেস্ক : দেশে চলমান তাপদাহে নাটোরের বাগাতিপাড়ায় দেখা দিয়েছে সুপেয় ও সেচের পানির তীব্র সংকট। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলার সাধারণ ও অগভীর প্রায় ৯৮ শতাংশ নলকূপে পানি উঠছে না। এতে প্রায় ৩৩ হাজার নলকূপ অকেজো হয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক গ্রামের মানুষ। উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় ও উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাপদাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই উপজেলার প্রায় ৩৩ হাজারের বেশি সাধারণ ও অগভীর নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ৩৫ ফুটের বেশি নিচে নেমে যাওয়ায় এলাকায় সুপেয় পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এখন তারা পাম্প, মডিফাইড ও সাবমার্সিবল গুলো দিয়েই এ এলাকার সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এদিকে তাপদাহে শুকিয়ে গেছে উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড়াল ও মুসা খাঁ নদীও।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় পানির জন্য হাহাকার বেড়েছে মানুষের। উপজেলার আরজিমাড়িয়া, সোনাপাতিল, গালিমপুর, লোকমানপুর, রহিমানপুর, দেবনগর, সাইলকোনা, দয়ারাপুর, বাটিকামারি, ক্ষিদ্রমালঞ্চি, কালিকাপুর, জিগরী, তমালতলা, বিলগোপালহাটি, স্বরূপপুর, চকমাহাপুর এবং কামারপাড়া, জামনগর এবং পাঁকা এলাকায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত বছরও শুষ্ক মৌসুমে উপজেলায় পানির সংকট দেখা দিয়েছিল। চলতি বছর এ সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এলাকার শতভাগ সাধারণ নলকূপ ও ইঞ্জিনচালিত অগভীর নলকূপে পানি উঠছে না। ফলে খাবার পানির যেমন সংকট দেওয়া দিয়েছে, তেমনি জমিতে সেচ দেওয়া, রান্না, গোসলসহ প্রতিদিনের অনেক কাজই ব্যহত হচ্ছে। এদিকে আম ও লিচুর মকুল ঝরে যাচ্ছে।
এলাকায় যেসব বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে সাবমার্সিবল পাম্প আছে, সেখানে সকাল-সন্ধ্যা পানি নেওয়ার জন্য পড়ছে দীর্ঘ লাইন। লাইনে দাঁড়িয়ে যেটুকু পানি মিলছে তা দিয়েই সাংসারিক কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে স্থানীয়দের। অনেকে দূরদূরান্ত থেকে ভ্যানে করে পানি আনছেন। বাড়ির নলকূপগুলোর মতো অকেজো মাঠের যন্ত্রচালিত অভীর নলকূপগুলোও। বাড়ির আশপাশের ফসলের জমিতেও সাবমার্সিবল পাম্প থেকে সেচ দেওয়া হচ্ছে। তবে তাতে বিপুল খরচ হচ্ছে কৃষকদের।
উপজেলা সদর ইউনিয়ন বড়পুরিয়া এলাকার কৃষক সাবাজ আলী(৬০) জানান, বড়পুরিয়া, ঠেঙ্গামার মাঠে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে ২টি অগভীর নলকূপ আছে। কিন্তু কোনটিতেই পানি উঠছে না। তাই বাধ্য হয়ে ১০ ফিট গর্ত করে মেশিন নিচে নামিয়ে পানির ব্যবস্থা করছেন। তাও আগে যেখানে ১ বিঘা জমিতে পানি দিতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগত, এখন সময় লাগছে ১০-১২ ঘন্টা। যেখানে ১ লিটার তেল করচ হতো সেখানে ৬-৭ লিটার তেল খরচ হচ্ছে। তারপরও পানির প্রবাহ একেবারেই নাই। এরকম পরিস্থিতি থাকলে অধিকাংশ ধানই চিটা হয়ে যাবে। এবং ধানে রোগবালাইয়ের আক্রমণও বাড়বে।
উপজেলার ৪ নং ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম লেলিন বলেন, ইউনিয়নে সরকারিভাবে প্রায় ৫০টি সাবমার্সিবল পাম্প দেওয়া হয়েছে। আর ব্যক্তিগত ভাবে অনেকেই নিজের বাড়িতে সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়েছেন। তবে তীব্র গরমে এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।