আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত সরকার মাইক্রো-ব্লগিং সাইট টুইটারকে তাদের প্লাটফর্ম থেকে কিছু কনটেন্ট সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়ার পর টুইটার এর বিরুদ্ধে আদালতে গেছে। টুইটার বলছে, ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার যেসব দাবি জানাচ্ছে, সেগুলো হয় স্বেচ্ছাচারী অথবা খুব বেশি বাড়াবাড়ির পর্যায়ে পড়ে। টুইটারের সঙ্গে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গত কয়েক বছরে টুইটারকে বেশ কিছু পোস্ট তাদের প্লাটফর্ম থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে স্বাধীন শিখ রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন জানানো পোস্ট থেকে শুরু করে, কৃষকদের আন্দোলন সম্পর্কে কথিত মিথ্যাচার এবং কোভিড মোকাবেলায় ভারত সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনামূলক অনেক পোস্ট ছিল।
টুইটার জানায়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তাদেরকে ভারতে অনেকগুলো একাউন্ট বন্ধ করে দিতে বলা হয়। এর মধ্যে ভারতের সুপরিচিত মুসলিম সাংবাদিক এবং সমালোচক রানা আইয়ুব এবং পাকিস্তানি সরকারের পরিচালিত কিছু একাউন্টও আছে।
এগুলোর বিরুদ্ধে যে টুইটার এখন আদালতের শরণাপন্ন হলো, তাতে বোঝা যায় ভারত সরকারের সঙ্গে তাদের দ্বন্দ্ব আরও তীব্র হচ্ছে। ভারত সরকার যখন এসব নির্দেশ জারি করেছিল, তখন মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সরব অধিকার কর্মীরা এর তীব্র সমালোচনা করেন।
কিন্তু ভারত সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে ভারতের আইন মেনে চলতে হবে।
গত বছর যখন ভারতে কৃষকদের তীব্র আন্দোলন চলছিল, তখন ভারত সরকারের আইনি নোটিশের পর টুইটার প্রায় আড়াইশোটি একাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারত সরকার জন-শৃঙ্খলার কথা বলে এসব একাউন্টের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল।
এসব একাউন্টের মধ্যে অনেক অনুসন্ধানী সংবাদ সাময়িকী, অধিকার কর্মী এবং গোষ্ঠীর একাউন্ট ছিল। দিল্লির বাইরে কৃষকদের যে অবরোধ ছিল, তার প্রতি সমর্থন জানাচ্ছিল এরা।
তবে বন্ধ করার ছয় ঘণ্টার মধ্যেই টুইটার আবার এসব একাউন্ট চালু করে। তখন তারা বলেছিল, এসব একাউন্ট বন্ধ রাখার যথেষ্ট যুক্তি নেই।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে টুইটারকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তারা ভারতে ব্যবসা করতে চাইলে স্বাগতম, কিন্তু সেটা করতে হবে ভারতীয় আইন-কানুন মেনে। এ বছরের মে মাসে দিল্লিতে টুইটারের অফিসে পুলিশ যাওয়ার পর টুইটার ভারতে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনি বৈষ্ণব মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এএনআইকে বলেন, “একটা কোম্পানিই হোক, বা যে কোন সেক্টরই হোক, তাদেরকে ভারতের আইন মেনে চলতে হবে।”
ভারত সরকার এর আগে বলেছিল, টুইটারসহ বড় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে কনটেন্ট সরিয়ে নেয়ার যে অনুরোধ করা হয়েছিল, সেটা তারা মানেনি। এরপর গত মাসের শেষের দিকে ভারতের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় টুইটারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়।
ভারত সরকার তাদের তথ্য প্রযুক্তি আইনের বলে জাতীয় নিরাপত্তা এবং জন শৃঙ্খলার কথা বলে যে কোন অনলাইন কনটেন্ট ব্লক করে দিতে পারে। ভারতে টুইটার ব্যবহার করেন প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ মানুষ। বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।