জুমবাংলা ডেস্ক : মানুষ দিয়ে নয়, কোটি টাকার খামার পাহারায় রাখা হয়েছে জার্মান শেফার্ড জাতের দুই কুকুর। রাতে চোর এবং শিয়ালের উৎপাত থেকে রেহাই পেতে গবাদি পশুর পাহারায় কাজ করছে কুকুর দুটি।
জানা যায়, ১০ মাস আগে নওগাঁর পোরশা উপজেলার ছাওড় ইউনিয়নের সারক ডাংগার মাঠ নোনাহার (পশ্চিম পাড়ায়) একটি গরুর খামার গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ। সেখানে বর্তমানে তার খামারে ১০০টির মত বিভিন্ন জাতের গরু আছে। আর এই খামারের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখা হয়েছে বিদেশি (জার্মান শেফার্ড) জাতের দুটি কুকুর। তাদের নাম রাখা হয়েছে জ্যাক ও হান্না। এমন পদক্ষেপ নেওয়ার সুফলও পাচ্ছেন তিনি। বিষয়টি অনেকটা শখের বশে হলেও বেশ সাড়া ফেলেছে এলাকায়। এছাড়াও তার এই খামারে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে ছয়/সাত জন মানুষের।
খামারি মুজাহিদুল ইসলাম জাহিদ বলেন, ১০ মাস আগে আমি এই গরুর খামার শুরু করি। এর পর শখের বশে ঢাকার একটি ফার্ম থেকে খামার দেখাশোনা করার জন্য বিদেশি জার্মান শেফার্ড জাতের দুটি কুকুর কিনে নিয়ে আসি। রাত ৮টার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় আবার সকালে তাদের আটকে রাখা হয়। খামারের চারপাশে বাউন্ডারি থাকায় তারা বাইরে কোথায় যেতে পারে না। এছাড়াও খামার দেখাশোনার জন্য ছয়/সাত জন মানুষ আছে। তারা দিনের বেলা দেখাশোনা করেন।
মানুষ ছেড়ে কেন কুকুরকে বিশ্বাস করলেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মানুষের চেয়ে কুকুর অনেক বেশি বিশ্বস্ত। দেখা গেল আমি খুব বিশ্বস্ত মানুষ পেলাম কিন্তু সারাদিন কাজ করার পর রাতে সেই মানুষটি ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে। এসময় চোর এসে কিছু চুরি করে নিয়ে গেল সে বুঝতেই পারলো না। কিন্তু কুকুর রাতে ঘুমাবে না আর ঘুমিয়ে গেলেও শব্দ পেলে জেগে যাবে। সেই চিন্তা থেকেই এই পরিকল্পনা করা।
তিনি বলেন, কয়েকবার চোর ভেতরে প্রবেশের চেষ্টাও করেছে। কিন্তু কুকুরগুলো হইচই করে টের পাইয়ে দিয়েছে। এছাড়াও দিনে বা রাতে অপরিচিত কোনো মানুষকে প্রবেশ করতে দেখলেই হইচই শুরু করে দেয়। সহজে কুকুরকে ফাঁকি দিয়ে কেউ ভেতরে ঢুকতে পারে না।
ওই খামারে কাজ করেন আমিনুল ইসলাম দুলাল। তিনি বলেন, আমরা কয়েকজন সারাদিন এসব গরু দেখাশুনা করি। সন্ধ্যা হলেই দুই কুকুরকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রাতে নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হয়। বাইরের কোনো মানুষ এলে কুকুরগুলো হইচই শুরু করে দেয়। আমরা তখন সজাগ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মহির উদ্দিন বলেন, কুকুর যে কেউ পালতে পারে। তবে কেউ যদি এই ধরনের কুকুর রাখতে চায় তাকে অবশ্যই জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে হবে। দেখা গেল কোনো চোরকে কুকুর কামড় দিল এর কারণে সেই ব্যক্তিটা মারা গেল তখন এর দায়ভার কে নেবে। এছাড়া যারা কুকুর পোষে তাদেরও তো ক্ষতি হতে পারে। এজন্য অবশ্যই জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে হবে।
তিনি বলেন, যারা গ্রামে বাস করে কম-বেশি সবার বাড়িতেই কুকুর থাকে। কুকুর যে বাড়িতে থাকে অপরিচিত কেউ গেলে হইচই করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে কুকুর দিয়ে পাহারা দেওয়ার কাজ হয় কিনা আমার জানা নেই। তবে মনে করি এখন যেহেতু সিসি ক্যামেরার যুগ তাই সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।