জুমবাংলা ডেস্ক : ভালো চাকরির আশায় দুই বছর আগে দালালের মাধ্যমে লিবিয়ায় পাড়ি জমান বাংলাদেশের দুই তরুণ। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর চাকরির কোনো সুযোগ তো পানইনি, উল্টো এক মাফিয়া চক্রের হাতে বন্দি হয়ে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হন। প্রাণহানির শঙ্কায় পড়েছিলেন তারা।
তবে শেষমেশ তাদেরকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। ব্র্যাক এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস অফিস’ ও ‘ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশনের’ সহায়তায় উদ্ধার হওয়া এই দুই তরুণ এখন নিরাপদে বাংলাদেশে রয়েছেন।
ঝিনাইদহের মতিউর রহমান সাগর ও কুষ্টিয়ার তানজির শেখ বুধবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বুরাক এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। একই ফ্লাইটে আরও ১৬২ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন, যারা বিভিন্ন কারণে লিবিয়ায় আটকে ছিলেন।
ব্র্যাক জানায়, ২০২৩ সালে সাগর ও তানজির স্থানীয় দালালের খপ্পরে পড়ে প্রতিজন প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ করে লিবিয়ার উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। দালালরা তাদেরকে আশ্বাস দিয়েছিল, লিবিয়ায় ভালো প্রতিষ্ঠানে চাকরি হবে।
কিন্তু বাস্তবে সেখানে গিয়ে তারা কোনো কাজ তো পানইনি, বরং পাচারকারীরা তাদেরকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে এক মাফিয়া চক্রের কাছে বিক্রি করে দেয়। ওই চক্র ৮০ জন বাংলাদেশিসহ তাদের একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাদের উপর চালানো হয় নৃশংস নির্যাতন—লোহার রড, লাঠি দিয়ে পেটানো হয়, এমনকি বৈদ্যুতিক শকও দেওয়া হয়।
একপর্যায়ে সাগর ও তানজিরের শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে পড়ে যে, মাফিয়ারা তাদের ফেলে রেখে চলে যায়। এরপর তারা কোনওভাবে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে এক আত্মীয়ের বাসায় পৌঁছায়।
পরিবারের পক্ষ থেকে ব্র্যাকের কাছে সহায়তা চাওয়া হলে, বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ট্রাফিকিং ইন পারসনস অফিস ও ইন্টারন্যাশনাল জাস্টিস মিশন গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে। তাদের নেতৃত্বে ও তদারকিতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মাধ্যমে লিবিয়ায় থাকা আইওএম কর্মকর্তারা দুই তরুণকে উদ্ধার করে নিরাপদ আবাসনে স্থানান্তর করেন।
সব ধরনের আইনি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ করে, অবশেষে বুধবার দেশে ফেরেন সাগর ও তানজির।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।