আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আসাম সরকার যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) খসড়া করেছে, সেখান থেকে বাদ পড়েছেন ৪১ লাখ মানুষ। যার মধ্যে আছেন বিজেপির অনেক হিন্দু সমর্থকও। বিশেষ করে বাঙ্গালী হিন্দুরা, যারা ক্ষমতাসীন বিজেপির মূল সমর্থক গোষ্ঠীর একটি। এমনটিই মনে করেন বাঙ্গালী হিন্দু নেতারা। চলতি মাসের ৩১ তারিখে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, উমাকান্ত ভৌমিক নামে এক বাঙ্গালী হিন্দু ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময় থেকেই বিজেপিকে সমর্থন করে আসছেন। তিনি এবং তার পরিবারের ৪১ জন এনআরসি থেকে বাদ পড়েছেন। এ অবস্থায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন উমাকান্ত। এমনকি তিনি দল হিসেবে বিজিবির প্রতিও হতাশ। তিনি জানান, এই তালিকায় নাম নেই বহুসংখ্যক হিন্দুরও।
উমাকান্ত বলেন, পরিবারের সদস্যদের নামের সত্যায়নের জন্য একবার নয়, সাতবার এনআরসির শুনানিতে উপস্থিত হয়েছি। আমাদের খুব বেশি আশা ছিল না। আমরা বিজেপির তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থক। আমরা বাঙ্গালী হিন্দুরাই আসামে বিজেপির প্রধান সমর্থক। আসামে বিজেপির ভিত্তিটা আমরাই গড়েছি। কিন্তু আমরা যখন রাস্তায় হেনস্তার শিকার হচ্ছি তখন সরকার আমাদের কোনো সহযোগিতা করছে না।
আসামে ১৯৫১ সালে প্রথম এনআরসি চালু করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর আসামে বাঙ্গালী ‘অবৈধ অনু্প্রবেশকারী’ চিহ্নিত করতে নির্দেশ দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আসামের অনেকেই বলছেন, যে তারা এখন এনআরসি নিয়ে সংশয়ে আছেন, যা অন্য রাজ্যেও পরিচালনা করার পরিকল্পনা করছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।
বিপুল সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর এনআরসি থেকে বাদ পড়ায় উদ্বিগ্ন ক্ষমতাসীন বিজেপিও। আসামের ১৮ শতাংশ বাঙ্গালী হিন্দুরাই সেখানে বিজেপির ভোট ব্যাংক। সবশেষ লোকসভা নির্বাচনে আসামের ১৪টি আসনের ৯টি পায় বিজেপি। যেখানে বিভিন্ন উপজাতি, আসামি ও বাঙালী হিন্দুরাই মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।
সারা আসাম বাঙ্গালী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক শান্তুনু মুখার্জি বলছেন, আমরা দেখেছি খসড়ায় বাঙ্গালী হিন্দুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য সরকারের দায় রয়েছে।
আসাম বিজেপির প্রধান রঞ্জিত কুমার দাস বলেন, যদি কোনো ভারতীয়র নাম বাদ পড়ে থাকে আমরা তাদের জন্য আপিল করব। এখানে ধর্মের কোনো প্রশ্ন না, সে হিন্দু, মুসলমান বা অন্য কোনো গোত্রের হোক।
বাঙ্গালী হিন্দু বিধায়ক শিলাদত্য দেব বলেন, এনআরসির সমন্বয়কারীরা একাত্তরের আগে আসা হিন্দু অভিবাসীদের প্রতি নারাজ। তারা এর চেয়ে বরং পরবর্তীতে আগত মুসলমানদের প্রতি বেশি আগ্রহী। এনআরসি একটি ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া। সবাই যাতে এই তালিকায় স্থান পায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।