স্পোর্টস ডেস্ক : দরজায় কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। বাংলাদেশ সময় ২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে শুরু হচ্ছে কুড়ি ওভারের বিশ্ব আসর। ২২ গজের লড়াইয়ের উত্তাপে গা মাখছে ক্রিকেটবিশ্ব। কোন দলের কতদূর যাওয়ার সম্ভাবনা, সেই আলোচনাও চলছে। এবারের আসরে অংশ নিচ্ছে ২০ দল। তাদের শক্তি-দুর্বলতা ও সম্ভাবনা নিয়েই এই আয়োজন। আজ থাকছে উগান্ডাকে নিয়ে-
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় চমক উগান্ডা। আফ্রিকা অঞ্চল থেকে তারা প্রথমবার নিশ্চিত করছে কুড়ি ওভারের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা। তবে বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলছে, ব্যাপারটা এমন নয়। ১৯৭৫ সালে, যেবার প্রথমবার ওয়ানডে ফরম্যাটের বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ইংল্যান্ডে, সেই বিশ্বকাপেও খেলেছিল উগান্ডা! অবাক লাগছে? কিন্তু অতীত ইতিহাস সেটাই বলছে।
১৯৭৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে পূর্ব আফ্রিকা দলের অন্যতম প্রতিনিধি ছিল এই উগান্ডা। সেবার কেনিয়া, তানজানিয়ার জাম্বিয়ার সঙ্গে উগান্ডা মিলে গড়েছিল পূর্ব আফ্রিকা দল। এরপর আইসিসি ট্রফিতেও খেলেছিল উগান্ডা, পূর্ব ও মধ্য আফ্রিকার দলের অংশ হিসেবে।
তবে এবার আর কারও অংশ হিসেবে নয়, নিজেরাই উড়িয়েছে সাফল্যের পতাকা। ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল বাড়িয়েছে আইসিসি। ফলে ছোট অনেক দলেরই সুযোগ তৈরি হয়। সেই সুযোগে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আসরের মূল পর্বে পৌঁছে গেছে উগান্ডা।
তবে যেনতেনভাবে আসেনি তাদের এই অর্জন। একসময় বিশ্বমঞ্চে পরিচিত দল ছিল কেনিয়া। সেই সোনালি দিন হয়তো তাদের এখন আর নেই। এরপরও ক্রিকেট শক্তিতে আফ্রিকার অনেক দেশ থেকে তারা এগিয়ে। জিম্বাবুয়ে তো এখনও আইসিসির পূর্ণ সদস্য দেশ। সেই কেনিয়া-জিম্বাবুয়ে পেছনে ফেলেছে উগান্ডা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাই প্রক্রিয়ায় তাদেরকে টপকে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে মূল পর্ব নিশ্চিত করেছে দলটি। বাছাই পর্বে শুধুমাত্র নামিবিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি বাদে সবকটিতে জিতেছে উগান্ডা।
আইসিসির সহযোগী দেশ হিসেবে উগান্ডার যাত্রা শুরু ১৯৯৮ সালে। গত শতাব্দীর শেষ ও চলতি শতাব্দীর শুরুতে ২২ গজে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি দেশটি। তবে ২০১৬ সাল থেকে এগোতে থাকে তাদের ক্রিকেটে। যেখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে স্কুল ক্রিকেট। যেটির ছাপ এবারের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের দিকে তাকালে স্পষ্ট হয়।
তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে গড়া উগান্ডার দল। ২১ বছর বয়সী জুমা মিয়ামির মতো সম্ভাবনাময় ক্রিকেটার যেমন আছেন, তেমনি ৪৩ পেরিয়ে যাওয়া ফ্রাঙ্ক এনসুবুগাও দাঁড়িয়ে আশার মশাল হাতে। বাছাই পর্ব উতরে আসা উগান্ডা এবার বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে চমক দেখানোর অপেক্ষা। ‘সি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও পাপুয়া নিউগিনি।
একনজরে:
অধিনায়ক: ব্রায়ান মাসাবা।
কোচ: অভয় শর্মা।
ডাকনাম: ক্রিকেট ক্রেনস।
র্যাংকিং: ২২।
বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে: এই প্রথম।
আগের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স
https://www.facebook.com/CricketUganda/posts/964544825677142?ref=embed_post
এই প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে উগান্ডা। স্বাভাবিকভাবেই ২০২২ সালের আসরে ছিল না আফ্রিকার দেশটি।
উগান্ডার বিশ্বকাপ সূচি
৪ জুন: আফগানিস্তান (গায়ানা), সকাল ৬-৩০ মিনিট
৬ জুন: পাপুয়া নিউগিনি (গায়ানা), ভোর ৫-৩০ মিনিট
৯ জুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ (গায়ানা), সকাল ৬-৩০ মিনিট
১৫ জুন: নিউজিল্যান্ড (ত্রিনিদাদ), সকাল ৬-৩০ মিনিট
নজরে থাকবেন
সিমন সেসাজি
টি-টোয়েন্টিতে উগান্ডার সেঞ্চুরি একটি। ২০২২ সালে সেটি করেছিলেন সিমন সেসাজি। তানজানিয়ার বিপক্ষে ৫৪ বলে খেলেছিলেন অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংস। কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে দেশটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। ২০২৪ সালেও সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়েছিলেন সেসাজি, তবে থামতে হয় ৯০ রানে।
রুপকথার জন্ম দিয়ে এবার যে বিশ্বকাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করলো উগান্ডা, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে এই ব্যাটারের। তার চমৎকার ব্যাটিংয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচ জিতেছে আফ্রিকার দেশটি। বিশ্বকাপ মঞ্চেও তার দিকে তাকিয়ে থাকবে উগান্ডা।
শক্তি
* দলটির খেলোয়াড়রা একসঙ্গে খেলছেন অনেকদিন
* অভিজ্ঞতার সঙ্গে তারুণ্যের মিশেলে গড়া স্কোয়াড
দুর্বলতা
* বড় মঞ্চে খেলার অনভিজ্ঞতা
* একাই ম্যাচ জেতাতে পারেন- এমন খেলোয়াড় নেই
* ব্যাটিংয়ে ভরসার তেমন কেউ নেই
ভবিষ্যদ্বাণী: গ্রুপ পর্ব।
https://www.facebook.com/CricketUganda/posts/954243160040642?ref=embed_post
উগান্ডা স্কোয়াড: ব্রায়ান মাসাবা (অধিনায়ক), ফ্রেড আসেলাম (উইকেটকিপার), দিনেশ নাকরানি, কসমাস কেউটা, রিয়াজাত আলি শাহ, জুমা মিয়াগি, রজার মুকাসা, ফ্রাঙ্ক এনসুবুগা, রবিনসন ওবুয়া, রোনাক প্যাটেল, হেনরি সেনিয়োন্ডো, সিমন সেসাজি, আলপেশ রামজানি, কেনেথ ওয়াইসওয়া, বিলাল হাসান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।