আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন রুশ নাগরিক ইয়ান রাচিনস্কি। দেশের নাগরিক অধিকার বিষয়ক সংস্থা মেমোরিয়ালকে এ অর্জন প্রত্যাখ্যান করতে চাপ দিয়েছিল ক্রেমলিন।
তবে ইয়ান পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। সেই সাথে সমালোচনা করেছেন নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধকে উন্মাদনা বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ান নাগরিক ইয়ান রাচিনস্কি। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) নরওয়ের রাজধানী অসলোয় নোবলে পুরস্কার গ্রহণের সময় চলমান যুদ্ধ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
ইয়ানের সঙ্গে এদিন শান্তিতে নোবেল জেতা ইউক্রেনের সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ’র ওলেক্সান্দ্রা মাতভিচুকও পুরস্কার নেন। তিনিও রাশিয়া ও বেলারুশ প্রধানদের নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন।
ইয়ান রাচিনস্কি রাশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল’র প্রধান। তার দাবি, পুতিন তার দল দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে উন্মাদ ও অপরাধমূলক আগ্রাসন চালাচ্ছে। রাশিয়ার নাগরিক সমাজের আজকের দুঃখজনক অবস্থা তার (পুতিন) অমীমাংসিত অতীতের সরাসরি পরিণতি।
ক্রেমলিনের নিন্দা করে তিনি বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন উন্মাদনা ও অপরাধমূলক যুদ্ধের আদর্শিক যুক্তি হয়ে উঠেছে। এই উন্মাদনার প্রথম শিকারগুলোর মধ্যে একটি ছিল রাশিয়ার ঐতিহাসিক স্মৃতি। এখন, রুশ গণমাধ্যমগুলো প্রতিবেশী দেশের বিনা প্ররোচনায় সশস্ত্র আক্রমণ, অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করা, অধিকৃত অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজন অনুসারে যুদ্ধাপরাধকে ন্যায়সঙ্গত হিসাবে উল্লেখ করে।
পুরস্কার গ্রহণের পর নিজ বক্তব্যে ওলেক্সান্দ্রা মাতভিচুক বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার অর্থ আগ্রাসীর চাপের কাছে নতি স্বীকার করা নয়। এর অর্থ হল নিষ্ঠুরতা থেকে মানুষকে রক্ষা করা। আক্রমণের মুখে থাকা একটি দেশ অস্ত্র রেখে শান্তিতে পৌঁছাতে পারে না।
এ সময় তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও বেলারুশের স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি করার আহ্বান জানান। মাতভিচুক বলেন, আমাদের প্রমাণ করতে হবে যে আইনের শাসন কাজ করে এবং ন্যায়বিচার বিদ্যমান থাকে; এমনকি যদি তারা বিলম্বিতও হয়।
রাশিয়ার সবচেয়ে সুপরিচিত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি মেমোরিয়াল। তবে গত বছরের শেষ নাগাদ এটি বন্ধের নির্দেশ দেয় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বন্ধের তিন দশকের বেশি সময় স্ট্যালিন যুগের নৃশংসতা প্রকাশে কাজ করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। এবার তাদের নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণেও প্রায় বাধা দেওয়া হয়। ক্রেমলিন থেকে মেমোরিয়ালকে পুরস্কার নিতে না করা হয়।
এমন অভিযোগ করে সংস্থাটির প্রধান ইয়ান রাচিনস্কি বলেন, ক্রেমলিন থেকে আমাকে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা সেন্টর ফর সিভিল লিবার্টিস ও বেলারুশের কারাবন্দী মানবাধিকার কর্মী আলেস বিলিয়াতস্কি পুরস্কার পাওয়ার অনুপযুক্ত। আপনি পুরস্কার গ্রহণ করবেন না।
সূত্র: এপি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।