রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে চীনের বিরুদ্ধেও অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টির কথা বলেছেন তিনি। খবর রয়টার্স।
হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ বৈঠকে ভিডিও কলে অংশ নেন ট্রাম্প। বৈঠকে রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির পর ইউক্রেনকে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল।
সেখানে ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেন, ইউরোপকে রাশিয়ার তেল কেনা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কারণ এই অর্থ দিয়েই মস্কো ইউক্রেন যুদ্ধে অর্থায়ন করছে। তিনি উল্লেখ করেন, শুধু এক বছরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কিনে প্রায় ১.১ বিলিয়ন ইউরো দিয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে হামলার পর ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়ার ওপর দীর্ঘদিনের জ্বালানি নির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে। ইউরোপীয় কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে, ২০২৮ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে।
বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ ২০২২ সালে অপরিশোধিত তেল এবং ২০২৩ সালে গ্যাস আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। তবে হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার মতো কয়েকটি দেশ এখনও সীমিত আকারে ক্রুড তেল নিচ্ছে।
এছাড়া ভারতসহ তৃতীয় দেশে প্রক্রিয়াজাত করা রাশিয়ার তেল ইউরোপে প্রবেশ করছে। ট্রাম্পের মন্তব্যে তিনি ঠিক কোন ধরনের আমদানিকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন, তা স্পষ্ট নয়।
হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বৈঠকে ট্রাম্প ইউরোপীয় নেতাদের বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থায়নে চীনও ভূমিকা রাখছে। তাই তাদের ওপরও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘ইউরোপীয়রা যদি এখনো রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখে, তবে তাদের আন্তরিকতা কোথায়?” ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, “এটি আমার যুদ্ধ নয়, বরং ইউরোপীয়দেরই বেশি দায়িত্ব নিতে হবে।’
বৈঠকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনও উপস্থিত ছিলেন।
ট্রাম্প এর আগে সতর্ক করেছিলেন, রাশিয়ার তেল কিনলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। তবে গত এপ্রিলে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করলেও রাশিয়ার ওপর সরাসরি কোনো শুল্ক আরোপ করেননি।
অন্যদিকে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বৃহস্পতিবার জানান, যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার জন্য স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে আন্তর্জাতিক বাহিনী পাঠাতে অন্তত ২৬টি দেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।