জুমবাংলা ডেস্ক : সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে আপেল চাষ শুরু করেছেন বোরহান উদ্দিন। বড়হর ইউনিয়নের খাসচর জামালপুর গ্রামের বাড়িতে ১৪ মাস আগে প্রথম দফায় দেড় বিঘা জমিতে আপেল গাছের কলম (প্লান্ট) রোপণ করেন তিনি। বর্তমানে গাছগুলো বেশ বড় হয়ে প্রথম ফল ধরেছে।
ঢাকার একটি বহুজাতিক বিদেশি কোম্পানির কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত বোরহান উদ্দিন। তিনি তার বাড়ির কৃষি ফার্মে করা আপেল বাগানের নাম দিয়েছেন ‘হাসান অ্যান্ড ব্রাদার্স আপেল অর্চার্ড’।
বোরহান উদ্দিন জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে বাড়ির জমিতে আপেল চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। দু’বছর আগে তিনি ভারতের হিমাচল প্রদেশের টিস্যু কালচার ল্যাবে আপেল চাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আপেল চাষের লক্ষ্য রয়েছে। প্রথম দফায় তিনি গেল বছর দেড় বিঘা জমিতে পাঁচ জাতের ২’শ কলম (প্লান্ট) রোপণ করেন। এসব জাতের মধ্যে রয়েছে আন্না, ডোবশেক গোল্ডেন, এইচআরএমএম-৯৯, টফিক সুইট ও গ্রিনিস মিস। এসব জাতের কলম (প্লান্ট) তিনি হিমাচলের হর্টি কার্লচার বাগান থেকে সংগ্রহ করেছেন।
বোরহান জানান, বাড়িতে আপেলের বাগান তৈরির ব্যাপারে তিনি হিমাচল প্রদেশের ননি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়জন গবেষক শিক্ষকের পরামর্শ নেন। এছাড়া নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড, কানাডা, আমেরিকা এবং ভারতের জম্ম কাশ্মিরের হর্টি কার্লচার ডিবিশনের গবেশকদের সঙ্গেও অনলাইনে আপেল চাষ নিয়ে মতবিনিময় করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। আর এই অভিজ্ঞতার আলোকেই তিনি প্রথমবারের মতো শুরু করেছেন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আপেল চাষ। প্রথমে গোবর সার দিয়ে চারাগুলো রোপণ করেন তিনি। পরে সময়মত ইউরিয়া, পটাস, জিপসাম, দস্তা, বোরণ ও ম্যাগনেসিয়াম সার গাছে প্রয়োগ করেন। এবছর বাগানে ৩০টি গাছে ফল ধরেছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে গাছে ফুল ধরেছিল। আগামী জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ে আপেলগুলো গাছে পরিপক্ক হবে এবং এসময় এগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করে বিক্রি করা যেতে পারে। তার বাড়িতে মধ্যম পর্যায়ে আপেল গাছগুলো এখন ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতা হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে এবছর জুন জুলাই মাসে তিনি প্রথমবার এক থেকে দেড় মন করে আপেল তুলতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, আগে দেশের সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অনেক মানুষ শখ করে বাড়ির ছাদে বা জমিতে বিচ্ছিন্ন ভাবে আপেল গাছ রোপণ করেছেন। অল্প বিস্তর ফলও পেয়েছেন বলে তিনি জানেন। তবে দেশের উত্তরাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তিনি প্রথম আপেল চাষ শুরু করলেন বলে জানান। আপেল চাষে উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ তাকে সহায়তা দিচ্ছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, বোরহান উদ্দিন তার বাড়িতে আপেল চাষ করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কৃষি বিভাগ তার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বড়হর ইউনিয়নে কর্মরত সহকারী উপজেলা কৃষি অফিসার হিরণ আলীকে সার্বক্ষণিক বোরহান উদ্দিনের আপেল বাগান দেখাশোনা ও পরামর্শ দেবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিও একাধিক বার তার আপেল বাগানে গেছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ বোরহানের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগে সবধরণের সহায়তা দেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।