নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলায় এক কিশোরকে বেধরক মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছিল গত রমজান মাসে, উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফ-এর চাল বিতরণের সময়। অভিযুক্ত কিশোরের নাম দুর্জয়।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউএনওর একটি ভিডিও হঠাৎ ভাইরাল হয়। যদিও ঘটনাটি প্রায় পাঁচ মাস আগের। ভিডিওতে দেখা যায়—আটপাড়া ইউএনও রুয়েল সাংমা হাতে লাঠি নিয়ে এক কিশোরকে বারবার আঘাত করছেন। সেখানে উপস্থিত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা তাকে থামাতে ব্যর্থ হন। এক পর্যায়ে ইউএনও নিজেই ক্লান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
তথ্য যাচাই করে জানা যায়—গত মার্চে ভিজিএফ চাল বিতরণের সময় বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদের ভেতরে এই ঘটনাটি ঘটে। বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে দুর্জয় চাল নিতে ভিড়ের মধ্যে ইউএনওর গায়ে ধাক্কা লাগিয়ে ফেলেন। এ ‘অপরাধে’ প্রথমে জনসম্মুখে চড়-থাপ্পড় দেন ইউএনও। পরে আনসারের লাঠি নিয়ে পরিষদের ভেতরে দুর্জয়কে বেধরক মারধর করেন এবং চার ঘণ্টা একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরিবারের অনুরোধে অবশেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়—এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীর পরিবারের।
দুর্জয়ের ভাষ্যে— “রমজানে চাল আনতে ইউনিয়ন পরিষদে যাই। ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির সময় ইউএনও স্যারের গায়ে ধাক্কা লেগে যায়। তখনই তিনি আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। পরে রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে লাঠি দিয়ে পেটান। কয়েকজন উপস্থিত মানুষ তার পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন। আমি পায়ে ধরে মাফ চাইলে তিনি আমাকে ছাড়েন। দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনা ঘটে, আর ইফতারের আগে ছাড়া পাই। পরে আমার চাচি জামিন দিয়ে নিয়ে আসেন।”
এ ঘটনায় দুর্জয় ৭ আগস্ট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
ঘটনা বিষয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমার সঙ্গে একাধিকবার ফোন ও ই-মেইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
আটপাড়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন— “ঘটনার ব্যাপারে আমরা আগে জানতাম না, আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করব। তবে ঘটনা কয়েক মাস আগের, এখন কেন এটি সামনে আনা হলো সেটিও খতিয়ে দেখার বিষয়।”