জুমবাংলা ডেস্ক : কিশোরীকে মদ খাইয়ে অচেতন করে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতেন তিনি। রক্ষিতা হিসেবে কিশোরীকে দিনের পর দিন একটি বাসায় রেখে এ কাজটি করেছেন ঢাকার সাভার উপজেলার বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। ওই কিশোরীকে বিদেশ পাচারেরও চেষ্টা করা হয়েছে একাধিকবার।
সাইফুলের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানা ও পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন ওই কিশোরী। এমতাবস্থায় অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। সিআইডি মামলার তদন্তে এলে অবশেষে সকলের সামনে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়। মামলার কপি ফটোকপি করে বিতরণ করছেন স্থানীয়রা।
গত ১১ মে মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলায় চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ছাড়াও আরও ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হচ্ছেন, মো. জামাল উদ্দিন মীর, মো. জাভেল হোসেন পাপন, মো. মোখলেছ (৩৫), মো. আনিসুল বাসার রতন (৩২), মো. জসিম (৫০), মো. কবির হোসেন ওরফে মিরাজ (৪৫), মো. আলাউদ্দিন (৩০) এবং মোসা. আনোয়ারা বেগম আঙ্গুরী (৫০)।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
পিটিশন মামলায় বাদির দাবি, ঘটনার পর তিনি পালিয়ে মুগদা থানায় গিয়ে একাধিকবার অভিযোগ করলেও থানার অফিসার ইনচার্জ জামাল উদ্দিন মীর মামলা না নিয়ে তাকে হয়রানি করেন। থানার এসআই এনামুল ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলেও মামলা রেকর্ড না করায় ওই জোনের সহকারি কমিশনারের (এসি) কাছে গিয়েও প্রতিকার মেলেনি।
ভুক্তভোগী জানায়, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের সাথে আঙ্গুরির ভালো সম্পর্ক ও গভীর সম্পর্ক রয়েছে। তাকে মোখলেস ও চেয়ারম্যান সাইফুল বিভিন্ন সময় মদ খাইয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। সাইফুল, মোখলেস পাপনে মদ খাইয়ে অজ্ঞান করে যা মন চায় তাই করেছে। কিশোরীর উপর চরম নির্যাতন করা হয়েছে। রাজধানীর মুগদা থানার মানিকনগর, কুমিল্লাপট্টি গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
কিশোরী আরও জানায়, প্রায় দুই মাস আগে থেকে এমন ঘটনা ঘটিয়ে আসছে তারা। এসব ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে আমি প্রতিবাদ করি। সাইফুল চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তারপরেও গোপনে আমি মামলার কাগজ লিখে মুগদা থানায় যাই। ওসি এ ব্যাপারে কোন গুরুত্ব দেয়নি। আমাকে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে রাত ১২টার দিকে আমাকে ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেন।
ভুক্তভোগী কিশোরী আরও জানায়, আমার বয়স যখন ১০/১১ বছর, তখন বরিশাল থেকে ঢাকায় মামার বাসায় বেড়ানোর উদ্দেশ্যে রওনা হই। কিন্তু এক লঞ্চে উঠতে গিয়ে আরেক লঞ্চে উঠে পড়ি। নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় আমি লঞ্চ হারিয়ে ফেলি। সেখান থেকে মোখলেস আমাকে এনে টাকার লোভে আঙ্গুরির কাছে বিক্রি করে দেয়। এর পর থেকে আমার সাথে আঙ্গুরির পরিচয়। যখন আমার বয়স ১২, তখন আঙ্গুরি আমার ওপর নির্যাতন শুরু করে। ঘরের মধ্যে আমাকে তালা দিয়ে বন্দি করে রাখত। ঠিকমতো খাবার ও পোশাক দেয়নি।
বাদীর আইনজীবি অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, মানবপাচার ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত। মামলা আমলে না নেয়ায় থানার ওসিকে বিবাদী করা হয়েছে। সাক্ষী করা হয়েছে জোনের এসি ও থানার এসআইকে।
সিআইডি জানায়, আদালতের নির্দেশ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাদীর বক্তব্য নিয়েছেন। আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
অভিযুক্ত সাভারের বনগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জুতোপেটা খেয়ে নিজের জন্মস্থান গ্রামই ছাড়তে হয়েছিল পি কে হালদারকে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।