সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের শিবালয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারের নিয়ে কটুক্তি ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নব নির্ববাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহিম খানের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় গত ৭ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধার স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র জমা দেয়া হয়েছে। একই সাথে উপজেলা চেয়ারম্যানকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য ১০ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন বীরমুক্তিযোদ্ধারা। অন্যথায় পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসৌজন্যমূলক বক্তব্য দেয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পত্রটি এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ জুন শিবালয় উপজেলা পরিষদ হল রুমে নব-নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সাথে বীরমুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ নানা শ্রেনীপেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় ও পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান মো.আব্দুর রহিম খান তার বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অসৌজনূলক ও ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্য দেন। যা রাষ্ট্রীয় নীতিমালার পরিপন্থী। তার এ ধরনের বক্তব্য প্রকৃত পক্ষে মন্ত্রণালয়কে উপেক্ষাসহ বিবেকবর্জিত গর্হিত অপরাধ বলে দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
অভিযোগ পত্রে মুক্তিযোদ্ধারা আরো উল্লেখ্য করেন, আগামী দশ দিনের মধ্যে আব্দুর রহিম খান তার বক্তব্য প্রকাশ্যে প্রত্যাহার না করলে উপজেলার সকল মুক্তিযোদ্ধাগণ পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিক খান বলেন, মতবিনিময় সভায় আব্দুর রহিম খান আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অপমানজনক কথা বলেছেন। তিনি নিজে তো মুক্তিযোদ্ধা না, একজন চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি আমাদেরকে নিয়ে মন্তব্য করার কোন যোগ্যতা রাখেন না। এরপরও তিনি বলেছেন, আপনারা কোথায় যুদ্ধ করেছেন সেই গল্প আমার কাছে লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে। যারা দিবেন না তারা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। আমি তাদের নাম কেটে দিবো। চেয়ারম্যান ক্ষোভের সাথে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আমাদের নিয়ে এসব কথা বলেছে। যেটা উনি কোন ভাবেই বলতে পারেন না। আমাদের কোন বিষয় থাকলে আমাদের মন্ত্রণালয় এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল দেখবে। আমরা সবাই একমত হয়ে চলতি মাসের ৭ জুলাই উপজেলা নির্বাহী বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছি। সাথে দশ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছি। তিনি ক্ষমা না চাইলে আমরা পরর্বতীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
শিবালয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ড ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানজনক কথা বলার সুযোগ নেই। আমি দুই পক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো। আসলে বিষয়টি ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।
শিবালয় উপজেলার নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম খান মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি শুধু তাদের যুদ্ধের গল্প চেয়েছি, যা আমরা এক সাপ্তাহ ধরে টেলিভিশনে প্রচার করবো। আমি যদি ভুল করে থাকি তাহলে তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।