সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পাঁচ তারকা হোটেলে খাওয়া নিয়ে বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তার এমন বক্তব্যে সরকারের উপদেষ্টারা কী ধরনের সুযোগ সুবিধা পান বা তাদের বেতন-ভাতা কত, আর তা দিয়ে অভিজাত হোটেলে যাওয়ার বিষয়গুলো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, রাতে আমার কাজ শেষ হতে কখনো কখনো ভোর হয়ে যায়। ওই সময় বাসায় খাবার দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। তখন বেশিরভাগ সময় ৩০০ ফিটে নীলা মার্কেটে যাই। সেখানে হাঁসের মাংস খুব ভালো পাওয়া যায়। সেটা আবার বেশি ভোর হয়ে গেলে বন্ধ থাকে। তখন ওয়েস্টিনে যাওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। গুলশানে সাবেক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত নেতা জানে আলম অপুর ভিডিও বার্তায় এ ঘটনায় নাম আসা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
আসলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে কোনো আইন বা নীতিমালা নেই।
২০১১ সালের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করায় বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাদের বেতন ও সুযোগ সুবিধার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছুই বলা নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সমান পদমর্যাদায় দায়িত্বপালন করছেন প্রধান উপদেষ্টা। একইভাবে মন্ত্রীর সমান মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করছেন উপদেষ্টারা। সেই হিসাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টারা মন্ত্রীদের সুবিধা পাচ্ছেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী ‘দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স (রেমুনারেশেন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’ এবং মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ‘দ্য মিনিস্টারস, মিনিস্টার অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমুনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজ) (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন, ২০১৬’ অনুযায়ী বেতন-ভাতা ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। এখন প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর ও উপদেষ্টারা মন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।
প্রধান উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর সমান মাসে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা বেতন পান। এছাড়া তিনি মাসিক বাড়ি ভাড়া পান এক লাখ টাকা, দৈনিক ভাতা পান তিন হাজার টাকা।
একজন উপদেষ্টা মন্ত্রীর সমান মাসে বেতন পান এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা। একজন মন্ত্রীর দৈনিক ভাতা দুই হাজার টাকা, নিয়ামক ভাতা মাসিক ১০ হাজার টাকা, স্বেচ্ছাধীন তহবিল ১০ লাখ টাকা, মোবাইল ফোন কেনার জন্য ৭৫ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন।
সরকারি খরচে সার্বক্ষণিক গাড়ি। ঢাকার বাইরে অফিসিয়াল ট্যুরের জন্য অতিরিক্ত একটি জিপ গাড়ি পাবেন, যার যাবতীয় খরচ সরকার বহন করে।
গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, টেলিফোনসহ সরকারি বাসভবনের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণ সরকার বহন করবে। সরকারি বাসায় না থাকলে বাড়ি ভাড়া বাবদ ৮০ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে বাড়ি ব্যবস্থাপনা খরচ ও সব ধরনের সেবা খাতের বিল পাচ্ছেন উপদেষ্টারা।
সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়াও একজন উপদেষ্টা বাসস্থান থেকে অফিস বা অফিস থেকে বাসস্থানে যাতায়াতের খরচ পান। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণ খরচও তিনি পান। এছাড়া অন্তত দুইজন গৃহকর্মীর ভ্রমণের খরচ পেয়ে থাকেন।
বাড়তে পারে বৃষ্টির প্রবণতা, যেসব অঞ্চলে হতে পারে ভারী বর্ষণ
একজন উপদেষ্টা মন্ত্রীদের মতো উপসচিব পদমর্যাদার একজন একান্ত সচিব, সহকারী সচিব পদমর্যাদার একজন সহকারী একান্ত সচিব এবং ক্যাডারের বাইরে থেকে আরেকজন সহকারী একান্ত সচিব পান। এছাড়া জাতীয় বেতন স্কেলে দশম গ্রেডের দুইজন কর্মকর্তা পান। আরও পাবেন একজন জমাদার ও একজন আর্দালি, দুইজন এমএলএসএস, একজন পাচক বা পিয়ন।
তথ্য ও সূত্র : জাগোনিউজ২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।