জুমবাংলা ডেস্ক: নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় এক কর্মী-সর্মথকের উদ্দ্যেশ্যে পায়ের জুতা ছুড়ে মারার অভিযোগ উঠেছে ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার ২০ সেকেণ্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদ এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে সভার মঞ্চের পাশ থেকে এক সর্মথক বলে উঠে সুমির বাপ আসছে, সুমি নিবার্চন করবে দেখিয়া।
এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে কথা বলা বন্ধ করে লাথি মারতে গিয়ে পায়ের জুতা ছুরে মারে সেই সমর্থকের দিকে।
তবু সেই সর্মথক বলতে থাকে সুমির বাপ আসছে..ওটা কন..ওটা কন।
এরপর ভিডিওতে দেখা যায়, বক্তা সবার উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন যারা এটা করতে চায় তাদেরকে আমি বলতে চাই। আমি এমপি হতে চাই না, আমি তো মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম না। প্রিয় ডোমারবাসী..।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডোমার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাট গুডাউন মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
একই দিনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্যারেড ও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে রাজাকারের সন্তান আখ্যা দিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করেছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ।
প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে সেই প্রসঙ্গে কথা বলার সময় সেই কর্মীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের পায়ের স্যান্ডেল ছুরে মারে উপজেলা চেয়াম্যান। তবে ব্যাপক খোজাঁখুজির পরও খোঁজ মেলেনি সেই কর্মীর।
জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে চিলাহাটি নিজ ভোগডাবুরির বাসিন্দা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রেীয় সাধারণ সম্পাদক সরকার ফারহানা সুমির বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানীকে সুমির বাবার বাপ বলে সম্বোধন করা হয়। সরকার ফারহানা সুমি নীলফামারী -০১(ডোমার-ডিমলা) সংসদীয় আসনের মনোয়ন প্রত্যাশী।
মহান স্বাদীনতা দিবসের দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানি, সাবেক কমান্ডার নূর নবী ও সাবেক পৌর কমান্ডার ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা অনুষ্ঠান বর্জন করে মাঠ ত্যাগ করে চলে যান।
এরপরই রাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে কর্মী-সর্মথকের উদ্দ্যেশ্যে পায়ের জুতা ছুড়ে মারেন উপজেলা চেয়াম্যান।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। এরপর তোলপার শুরু হয় গোটা ডোমার জুড়ে, যা নিয়ে চলছে নানান ধরনের মন্তব্য।
আসাদুজ্জামান চয়ন নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ভিডিওটি পোস্ট করে সেখানে লিখেন, এই হলো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ এর চরিত্র। কিভাবে কর্মীর উদ্দেশ্যে সেন্ডেল ছুড়ে মারে??
সেই পোস্টে জুয়েল সরকার নামে একজন মন্তব্য করেন- এমন নেতা বাংলাদেশে খুবি বিরল.. উনি মানুষকে দিতে দিতে আজ উপজেলা চেয়ারম্যান, উনি নিজের জন্য কিছু রাখেনা সব উজাড় করে দেন, তারি একটা উদাহরণ এটা নিজ দলের কর্মীকে পায়ের জুতা দিচ্ছেন..!!
ডোমার ডিমলা বাসি আওয়াজ তুলুন আগামীতে সংসদে দেখতে চাই এমপি হিসেবে তাহলে সর্বস্তরের জনগণ জুতাই পাবে, এর চেয়ে আর কি আশা করে জনগণ জ্ঞানহীন নেতার কাছে।
মো. রোমান কবির নামে একজন লিখেন- কিছু তেলবাজ আছে বলেই এরকম ব্যক্তি নেতা হয় পরে আবার তেলবাজি করতে গিয়ে নেতার জুতা পিটা খায়।
উপজেলা চেয়ারম্যানের পক্ষ নিয়ে ভিডিও পোষ্টকারীর উদ্দেশ্যে একজন মন্তব্য করেন- আদর্শ মানুষের লক্ষ্য মুখের দিকে, আর মুচির লক্ষ্য পায়ের দিকে। আপনি মুচির থেকেও অধম কেন না আপনার লক্ষ্য তোফায়েল আহমেদের পায়ের দিকে।
এ.টি.এম.জুয়েল আক্তার সরকার নামে আরেকজন মন্তব্য করেন, এমন নেতা বাংলাদেশে খুবি বিরল.. উনি মানুষকে দিতে দিতে আজ উপজেলা চেয়ারম্যান, উনি নিজের জন্য কিছু রাখেনা সব উজাড় করে দেন, তারি একটা উদাহরণ এটা নিজ দলের কর্মীকে পায়ের জুতা দিচ্ছেন..!! ডোমার ডিমলা বাসি আওয়াজ তুলুন আগামীতে সংসদে দেখতে চাই এমপি হিসেবে তাহলে সর্বস্তরের জনগণ জুতাই পাবে, এর চেয়ে আর কি আশা করে জনগণ জ্ঞানহীন নেতার কাছে…
অ্যাড. আল মাসুদ চৌধুরী নামে আরেকজন মন্তব্য করেন একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে জনগণের কাছে আমি লজ্জিত।
কাজী মাহমুদা আহম্মেদ নামে এক নারী ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, এইটা আমি কি দেখলাম?? কর্মীর মুখে জুতা মারল ছি ছি!!
মো. খোরশেদ নামে আরেকজনের টাইমলাইনে একই ভিডিও দেখা যায়। সেই ভিডিও এর ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ডোমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে মুক্তিযোদ্ধার কথা বলায় তার আচরণ ভিডিওটাতে দেখুন।
এছাড়াও অনেকের টাইমলাইনে ভিডিওটি নানা ক্যাপশনে দেখা যায় এবং একেকজন একেক রকম মন্তব্য করেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা চেয়াম্যান তোফায়েল আহমেদের সাথে।
তিনি বলেন, এই ভিডিওয়ের বিষয়ে কিছু জানি না। এটা বানোয়াট, ভুয়া।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে সুমির বাপ বলায় উপজেলা চেয়াম্যানের ক্ষিপ্ত কেনো হলেন জানতে যোগাযোগ করা হয় সরকার ফারহানা সুমির সাথে তিনি বলেন, আমি এই ভিডিওটি দেখেছি। তবে কেনো কি কারণে জুতা ছুড়ে মারলেন তিনি এ বিষয়ে আমি অবগত না। যেহেতু ভিডিওটির পুরো অংশ আমি দেখিনি বা পাওয়া যায়নি। সেই হিসেবেও আমি এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাইনা। এটা আমার কাছে ওতটা গুরুত্বপূর্ণ না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।