জুমবাংলা ডেস্ক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করে নেটিজেনদের তোপের মুখে পড়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুম উর্মি। বিতর্কিত মন্তব্য করাই ইতোমধ্যে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়ে তাপসী তার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘সাংবিধানিক ভিত্তিহীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, রিসেট বাটনে পুশ করা হয়েছে। অতীত মুছে গেছে। রিসেট বাটনে ক্লিক করে দেশের সব অতীত ইতিহাস মুছে ফেলেছেন তিনি। এতই সহজ! কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।’
স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি পোস্ট দিয়েছি এটাই তো যথেষ্ট। অনলি মি করেছি, বিভিন্ন কারণে হতে পারে।’ পরে তিনি বলেন, এ বিষয় আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তাপসী তাবাসসুম উর্মির ফেসবুক আইডিতে গিয়ে দেখা গেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। এছাড়া, আওয়ামী লীগের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে বেশকিছু পোস্টও করেছেন। একটি স্ট্যাটাসে তিনি ছাত্র আন্দোলনের নিহত শহীদ আবু সাইদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছেন।
ফেসবুকে তার এই বিতর্কিত পোস্ট নিয়ে আনিস আলমগীর লিখেছেন, প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় ওএসডির পর এবার বরখাস্ত হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উর্মি। অপকর্মের জন্য আগেই তার চাকরি যাওয়ার ইঙ্গিত পেয়েছিলেন তিনি। মাঝখানে মুক্তিযোদ্ধা কার্ড খেলে কিছু লোকের সহানুভূতি পেলেও, তাতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি। সমস্যা নেই—চট করে যদি কেউ ঢুকে ক্ষমতায় বসে যায়, তাহলে সিনিয়র সচিব পদ পাকা হয়ে যাবে। ততদিন একটু ধৈর্য ধরার প্রয়োজন, আর আপাতত জেলের প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। ছাত্র হত্যার সমর্থন করে যা করেছেন, ভাগ্যে তার পরিণতি জুটতেও পারে।
আব্দুল কাদের আরাফাত লিখেছেন, লালমনিরহাটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক এবং বিচারের আওতায় আনা হোক। তাপসী তাবাসসুম তার নিজের ফেসবুক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী বলে অভিহিত করেছেন, যা ইতিহাস বিকৃতি ও গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অপমানের সামিল।
মোহাম্মদ আজিজুর রহমান লিখেছেন, তাপসী তাবাসসুম উর্মির মতো দলীয় ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত স্বৈরাচারের দোসররা প্রশাসনে ভরপুর।তাই কট্টর পন্থীদের চিহ্নিত করে,বরখাস্ত করা হোক।যারা অন্যায়ের সাথে সম্পৃক্ত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।
কামরান উদ্দিন রায়হান লিখেছেন, প্রসঙ্গ তাপসী তাবাসসুম উর্মি, রিসেট বাটন, “রাষ্ট্র সংস্কার”, অরাজনৈতিক সরকারের রাজনৈতিক বয়ান। কয়েকঘন্টা আগেই ফেইসবুক স্ট্যাটাসের জের ধরে ৪০মতম বিসিএস কর্মকর্তা তাপসী তাবাসসুমকে ওএসডি করেছে। মেয়েটার ফেসবুক পোস্ট পড়লাম। মেয়েটার প্রতি আমার বক্তব্য হলো, তুমি যে পোস্ট দিয়েছো তোমার অবস্থানটা কোথায় আর যাকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছো তার অবস্থানটা কোথায়? এতই যদি তুমি পক্ষ-বিপক্ষ বুঝো তাহলে চাকুরিতে গিয়েছ কেন সোনা? সারা জুলাই আগস্ট মাস জুড়ে কতগুলো মানুষ মারা গিয়েছে, দুই মাসও হয় নাই, আর বিতর্ক নিয়ে গিয়েছো ৫০ বছর আগে। তিন ঘন্টা হল ওএসডি হয়েছে, তারপরে আবার পোস্ট দিয়েছে আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী বলে, মেয়েটার কত বড় স্পর্ধা দেখিয়েছে। না না এই মেয়েকে চাকুরিতে রাখা যাবে না। সরকারি চাকুরী বিধিমালা ওথ ভঙ্গের দায়ে, এক্ষুনি চাকুরি থেকে চিরস্থায়ী বরখাস্ত করা উচিত।
মোঃ জহির হোসাইন লিখেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে রাজনৈতিক কর্মীর মতোই তার বক্তব্য। বিগত সরকারের সময় বিচারকগণও নিজেদেরকে শপথবদ্ধ রাজনৈতিক বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এদের কারনেই ফ্যাসিস্ট রেজিমের শাসন এতো দীর্ঘায়িত হতে পেরেছিল। এদের চাকরি যে বিশেষ বিবেচনায় হয়েছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। হাজারো ছাত্র-জনতার খুনের বিষয়ে এদের কোনো অনুতাপ তো নেই ই বরং পতিত স্বৈরাচারের ভাষায় এরাও ছাত্র-জনতার আত্মদানকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম বলে প্রচারণা চালানোর দু:সাহস দেখাচ্ছে। এদের ক্ষমা করে দিলে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করা হবে। তাই প্রশাসনের সকল স্তর থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের দ্রুত অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরী মনে করছি।
সোহেল আহমেদ লিখেছেন, ৭০ টি শিশু কিশোরসহ প্রায় ১৬০০ শত মানব সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে নির্বিচারে। প্রায় ২২ হাজার মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। এখনো অনেকেই হাসপাতালে মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। এতো কিছুর পরও এদের কন্ঠে কোন অনুশোচনা শুনেছেন কেউ! কোন আত্মসমালোচনা, কোন আত্মপোলব্ধি? বরং কন্ঠে ক্রোধ আছে, প্রতিহিংসাপরায়ণতা আছে, বিকারহীনতা আছে। ভাবতেই অবাক লাগে; এ কেমন মানুষ এরা !
দেশে ফেলে যাওয়া চ্যালা-চামুন্ডোরা আছে যথেস্ট, এখন ফেসবুকে উঁকি-ঝুঁকি দেয়। ওদের স্বভাব চরিত্র চিন্তাজগত একই, কী অদ্ভুত মিল! মনে হয় যেন এক উন্মাদ তৈরীর কারখানা থেকে সবার সৃস্টি। কী নির্লিপ্ত লজ্জাহীন বিবেকহীন প্রস্তরযুগের প্রাণী ওরা!
আনিস আয়েসা লিখেছেন, উনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ওনার নিয়োগ এ টু জেড সব চেক করা অত্যন্ত জরুরি উনি কিভাবে এতটুকু পর্যন্ত আসলো যোগ্যতার ভিত্তিতে আসলো না কোন মাধ্যমে আসলো না কোন মামু খালুর কারণে এতটুকু আসলো দেখা দরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।