জুমবাংলা ডেস্ক : ৪ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাক্ষর করেছেন ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’-এ। এই আইনের আওতায় ২০২৩ সাল থেকে অধিকাংশ নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসার ক্ষেত্রে নতুন একটি ফি চালু হচ্ছে, যার নাম ভিসা ইন্টিগ্রিটি ফি। এর পরিমাণ ২৫০ মার্কিন ডলার, যা প্রায় ৩০ হাজার টাকার সমান। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা চাকরির উদ্দেশ্যে যেতে আগ্রহীদের খরচ এখন অনেকটাই বাড়বে। বাংলাদেশিরাও এই ফি’র আওতায় পড়বেন, কারণ এটি প্রায় সব নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা ক্যাটাগরির জন্যই প্রযোজ্য।
ভিসা ইন্টিগ্রিটি ফি কী?
এই ফি হলো ভিসা আবেদনকারীদের জন্য একটি অফেরতযোগ্য সারচার্জ, যেটি বিদ্যমান ফি’র বাইরে অতিরিক্তভাবে পরিশোধ করতে হবে। ২০২৬ সাল থেকে এই ফি কার্যকর হবে এবং এটি ভিসা ইস্যুর সময় বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হবে। প্রতি বছর মুদ্রাস্ফীতির হার অনুযায়ী এই ফি’র পরিমাণ সমন্বয় করা হবে।
কারা এই ফি দিতে বাধ্য?
এই নতুন ফি বি-১/বি-২ (ভ্রমণ ও ব্যবসা), এফ এবং এম (শিক্ষার্থী), এইচ-১বি (কাজের), এবং জে (এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম) ভিসাধারীদের জন্য প্রযোজ্য হবে। তবে ‘এ’ এবং ‘জি’ ক্যাটাগরির কূটনৈতিক ভিসাধারীরা এই ফি থেকে অব্যাহতি পাবেন।
অর্থাৎ, ভারত বা বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থী, প্রযুক্তি পেশাজীবী, পর্যটক বা ব্যবসায়ী—সবার জন্যই এই অতিরিক্ত খরচ বাধ্যতামূলক হবে।
মোট খরচ কত বাড়বে?
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বি-১/বি-২ ভিসার খরচ ১৮৫ ডলার (প্রায় ২২,২০০ টাকা)। এর সঙ্গে নতুন ভিসা ইন্টিগ্রিটি ফি (২৫০ ডলার), আই-৯৪ ফি (২৪ ডলার) এবং ইএসটিএ ফি (১৩ ডলার) যোগ করলে মোট খরচ দাঁড়াবে প্রায় ৪৭২ ডলার বা ৫৬,৬৪০ টাকা—যা বর্তমানে প্রদানকৃত ফি’র প্রায় আড়াই গুণ বেশি। একইভাবে, শিক্ষার্থী বা কর্মীদের জন্য এফ বা এইচ-১বি ভিসার খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
এই ফি কি ফেরতযোগ্য?
এই ফি সাধারণভাবে ফেরতযোগ্য নয়। তবে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করলে আংশিক বা পূর্ণ রিফান্ড পাওয়া যেতে পারে। যেমন—
ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার ৫ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করলে, অথবা
বৈধভাবে থাকার মেয়াদ বৃদ্ধি করলে, অথবা
বৈধভাবে অভিবাসন স্ট্যাটাস (যেমন গ্রিন কার্ড) পরিবর্তন করলে।
তবে যদি কেউ ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করেন বা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন, তাহলে ফি ফেরত পাওয়ার যোগ্য হবেন না।
এই ফি আরোপের কারণ কী?
মার্কিন সরকার বলছে, এই ফি একটি নিরাপত্তাব্যবস্থা হিসেবে চালু করা হয়েছে, যা বিদেশি নাগরিকদের আইন মেনে চলার প্রতি উৎসাহিত করবে। এটি কার্যত একটি নিরাপত্তা জামানত, যা বিদেশি ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা মেনে চলতে বাধ্য করবে। এই ফি ও সংশ্লিষ্ট নীতি তদারকি করবে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, এবং প্রতিবছর মুদ্রাস্ফীতির ভিত্তিতে ফি সমন্বয় করা হবে।
অন্য কী কী নতুন নিয়ম এসেছে?
এই বিলের আওতায় শুধু ভিসা ফি নয়, রেমিট্যান্সে ১% আবগারি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা প্রবাসীরা দেশে টাকা পাঠাতে অতিরিক্ত খরচে পড়বেন। এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিকে কঠোর করা এবং প্রবাসী নাগরিকদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের একটি অংশ বলে জানায় মার্কিন প্রশাসন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।