আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। পাশাপাশি, শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামভিত্তিক ভিসাগুলোর ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত যাচাই-বাছাইয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
Table of Contents
বুধবার (২৮ মে) বিবিসি’র একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক কূটনৈতিক বার্তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোকে নতুন শিক্ষার্থী ভিসার জন্য আপয়েন্টমেন্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এই স্থগিতাদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারির ওপর জোর
ওই বার্তায় স্পষ্টভাবে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ক্রিনিং আরও জোরদার করা হবে। শিক্ষার্থী এবং এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। এই সিদ্ধান্ত মার্কিন দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলোর কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
সিএসবি নিউজের হাতে আসা অভ্যন্তরীণ নির্দেশনার একটি কপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী এখনো সাক্ষাৎকারের তারিখ পাননি, তাদের অ্যাপয়েন্টমেন্ট বাতিল করতে হবে। তবে যাদের আগে থেকেই নির্ধারিত রয়েছে, তারা নির্ধারিত সময়েই সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন।
ট্রাম্প প্রশাসন বনাম বিশ্ববিদ্যালয়
এই সিদ্ধান্ত এসেছে এমন এক সময়, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বহু প্রভাবশালী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক টানাপোড়েনপূর্ণ। বিশেষ করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই চাপের মুখে পড়েছে। প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি ও গবেষক নিয়োগের অনুমোদন বাতিল করলেও পরে ফেডারেল আদালতের আদেশে তা স্থগিত হয়।
উল্লেখ্য, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় এক-চতুর্থাংশ শিক্ষার্থী বিদেশি। ফলে, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য তা হতে পারে একটি বড় বিপর্যয়।
রাজনৈতিক ও নীতিগত বিতর্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বামপন্থি আদর্শে প্রভাবিত এবং ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলনের আড়ালে ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। হোয়াইট হাউস আরও অভিযোগ করেছে যে, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যমূলক ভর্তি নীতি অনুসরণ করছে এবং অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করছে।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন মুক্ত মতপ্রকাশের অধিকার দমন করতে চাইছে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা নিতে ইচ্ছুক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগকেই মার্কিন দূতাবাসে সরাসরি সাক্ষাৎকার দিতে হয়। কিন্তু ভিসা প্রক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের বিষয়টি তাদের জন্য প্রক্রিয়াটিকে আরও জটিল ও দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ করে তুলবে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উচ্চ টিউশন ফি থেকে রাজস্ব আয় করে থাকে। এই নীতিমালার প্রভাবে তাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, “আমরা দেশের ভেতরে কে প্রবেশ করছে, তা খুব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করি এবং এটি অব্যাহত থাকবে।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।