বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থায় বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ ও ‘ডাল-ই-২’র নির্মাতা কোম্পানি ওপেনএআই। এর ফলে বিভিন্ন অ্যাপে যোগ করা যাবে চ্যাটজিপিজির স্বক্ষমতা।
অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য চ্যাটজিপিটি’র এপিআই’র পাশাপাশি ‘হুইস্পার’ নামের ‘স্পিচ-ট্রান্সক্রিপশন’ মডেল চালুর কথা উঠে এসেছে বৃহস্পতিবারের ঘোষণায়।
এদিকে, অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য অতিরিক্ত ৩০ দিনের ডেটা ধারণ নীতি যোগ করার পাশাপাশি এই ব্যবস্থার উন্নতিতে তাদের ডেটা ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নিজস্ব পরিষেবার শর্তাবলীও বদলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সফটওয়্যার কোম্পানিটি।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন এপিআই’তে চ্যাটজিপিটি’র মতো একই এআই মডেল (‘জিপিটি-৩.৫-টার্বো) ব্যবহৃত হবে, যা অ্যাপ নির্মাতাদের অ্যাপে অবপরিবর্তিত বা নিজস্ব সংস্করণের চ্যাটজিপিটি যোগ করার সুযোগ দেবে।
এর প্রাথমিক উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, স্ন্যাপের ‘মাই এআই’, অনলাইন পড়াশোনার টুল ‘কুইজলেটের’ নতুন ভার্চুয়াল টিউটর ফিচার ও জনপ্রিয় শপিং অ্যাপ ইনস্টাকার্টের ‘আস্ক ইনস্টাকার্ট’ নামের টুল।
তবে, এপিআইটি কেবল চ্যাটজিপিটি’কে অনুকরণ করা ব্র্যান্ড ভিত্তিক বটগুলোতেই সীমিত থাকবে না; বরং এটি বিভিন্ন এমন ‘নন-চ্যাট’ সফটওয়্যার অভিজ্ঞতায় ক্ষমতা দেবে, যেগুলোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
চ্যাটজিপিটির নতুন এপিআই’র দাম প্রতি হাজার টোকেনে (প্রায় সাড়ে সাতশ শব্দে) শূন্য দশমিক দুই সেন্ট। পাশাপাশি, যাদের এপিআই’র মানদণ্ডের চেয়ে বেশি টোকেন ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে, এমন আর্থিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য ভিন্ন ব্যবস্থা রেখেছে কোম্পানিটি।
অ্যাপ নির্মাতাদের জন্য এইসব নতুন অপশন যোগ হয়েছে ভোক্তা-কেন্দ্রিক ‘চ্যাটজিপিটি প্লাস’ সেবায়। ফেব্রুয়ারিতে চালু করা এই সেবা ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে প্রতি মাসে গুনতে হবে ২০ ডলার করে।
অন্যদিকে, ওপেনএআই’র ‘হুইস্পার এপিআই’ হলো সেপ্টেম্বরে চালু করা ওপেন সোর্স ‘হুইস্পার’ স্পিচ-টু-টেক্সট মডেলের এক সংস্করণ।
“আমরা একটি মডেল প্রকাশ করেছি, তবে সেটি আসলে গোটা ডেভেলপার ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট ছিল না।” –মঙ্গলবার প্রযুক্তি সাইট টেকক্রাঞ্চকে বলেন ওপেনএআই’র প্রেসিডেন্ট ও সহপ্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ ব্রকম্যান।
“হুইস্পার এপিআই একই বড় মডেল, যা আপনি ওপেন সোর্স হিসেবে পেতে পারেন। তবে, আমরা একে ব্যাপকভাবে অপ্টিমাইজ করেছি। এটা অনেক, অনেক দ্রুত ও সুবিধাজনক।”
এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ট্রান্সক্রিপশন এপিআই ব্যবহারের জন্য অ্যাপ নির্মাতাদের প্রতি মিনিটে গুনতে হবে শূন্য দশমিক ছয় সেন্ট। একাধিক ভাষায় ‘শক্তিশালী’ ট্রান্সক্রিপশনের পাশাপাশি এটি ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের সুবিধা দিতে পারে।
অবশেষে, প্রাইভেসি ও নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়ার ভিত্তিতে নিজস্ব ডেভেলপার সংশ্লিষ্ট শর্তাবলীতে পরিবর্তন এনেছে ওপেনএআই। ফলে, কোনো ডেভেলপার রাজী না হলে কোম্পানি আর এপিআই’র মাধ্যমে ‘পরিষেবা উন্নতির’ জন্য জমা দেওয়া ডেটা তার বিভিন্ন এআই মডেল প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে না।
এর পাশাপাশি, ‘ব্যবহারকারীর চাহিদার ওপর নির্ভর করে’ (সম্ভবত এর মানে দাঁড়ায়, উচ্চমাত্রায় এপিআই ব্যবহার করা কোম্পানির বাজেটের সঙ্গে মেলে), বিভিন্ন এমন কঠোর অপশনের পাশাপাশি ৩০ দিনের একটি ডেটা ধারণ নীতি যোগ করছে কোম্পানিটি।
নিজেদের ডেটা মালিকানা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শর্তও শিথিল করছে কোম্পানিটি। পাশাপাশি তারা স্পষ্ট করে বলেছে, এগুলোর ইনপুট ও আউটপুটের মালিক ব্যবহারকারী নিজেই।
কোম্পানিটি ডেভেলপারদের জন্য নিজেদের উন্মোচনের আগের পর্যালোচনা প্রক্রিয়াকে বেশিরভাগ স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমের সঙ্গে প্রতিস্থাপিত করবে। এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে ওপেনএআই বলছে, ‘অ্যাপগুলোর সিংহভাগই অনুমোদিত হয়েছে যাচাইকরণ প্রক্রিয়া চলাকালীন’। পাশাপাশি তাদের দাবি, এগুলোর মনিটরিং ব্যবস্থায় ‘ব্যপক উন্নতি’ এসেছে।
“আমরা কীভাবে অ্যাপ নির্মাতাবান্ধব হয়ে উঠব, তাতে আমাদের সবচেয়ে বেশি মনযোগ ছিল।” –টেকক্রাঞ্চকে বলেন ব্রকম্যান।
“আমাদের লক্ষ্য হলো, এমন এক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে অন্যরাও ব্যবসা তৈরি করতে পারে।”
নোকিয়া T21: মাঝারি বাজেটে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য দুর্দান্ত ট্যাবলেট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।