সূর্য হলো আমাদের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র। পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৩ লাখ পৃথিবী যদি সূর্যের মধ্যে ঢোকাও, তাও এঁটে যাবে অনায়াসে। এবার নিজেই কল্পনা করে দেখ সূর্য কত বড়। তাহলে সূর্যই কি সবচেয়ে বড় তারা? এমনটা ভেবে থাকলে তোমাকে কোনো দোষ দেওয়া যায় না।
কারণ, পৃথিবী থেকে সূর্যকেই সবচেয়ে বড় দেখায়। কিন্তু আসলে সূর্য সবচেয়ে বড় নক্ষত্র নয়। সবচেয়ে বড় নক্ষত্রের ধারেকাছেও নেই সূর্য। সূর্য কোনো বড় নক্ষত্রই না। এটা একটা মাঝারি ধরনের তারা। পৃথিবী থেকে সূর্য সবচেয়ে কাছে বলে একে বড় দেখায়। তাহলে সবচেয়ে বড় নক্ষত্র কোনটি?
ওটার নাম ইউওয়াই স্কুটি (UY Scuti)। নামটা একটু কেমন যেন, তাই না? কিন্তু এটাই মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় নক্ষত্র। এটার ব্যাস আমাদের সূর্যের ব্যাসের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৭০০ গুণ বড়। একটা বৃত্তের ঠিক মাঝবরাবর কোনো রেখা টানলে ওই রেখাকে বলে ব্যাস। ধরো, সূর্যের ঠিক মাঝখান দিয়ে একটা দাগ টানলে। সেই দাগটা হলো ১ কিলোমিটার। তাহলে ইউওয়াই স্কুটি নক্ষত্রের মাঝবরাবর একটা দাগ টানলে সেটা হবে ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার। বুঝতে পারছো, ওটা কত্ত বড়!
ওটাকে যদি তুমি সৌরজগতের ঠিক মাঝখানে এনে রাখো, তাহলে ওটার আকর্ষণে বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গলসহ বৃহস্পতিও ওর পেটের মধ্যে চলে যাবে। এখন ভাবতে পারো, এই নক্ষত্র তাহলে আবিষ্কার করলেন কে? এটা জার্মানের বন অবজারভেটরির সাহায্যে ১৮৬০ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা খুঁজে পান। কোনো নক্ষত্রের আলো দেখে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন, তা কত বড়। অবশ্য আরও কিছু বিষয় আছে এর সঙ্গে, কিন্তু সেগুলো তোমরা আরও একটু বড় হলে জানতে পারবে।
এবার তোমাদের আরও কিছু বড় নক্ষত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আজকের লেখা শেষ করব। ‘ডব্লিউওএইচ জি৬৪’ ও ‘ডব্লিউওএইচ ৫১৭০’ দুটি বড় নক্ষত্র। এসব নক্ষত্রের চারপাশে ধূলিকণা ঘন মেঘ থাকে। সেই ধূলিকণা এক জায়গায় জড়ো হয়ে আবার নতুন গ্রহ, নক্ষত্র তৈরি করে।
এর মধ্যে প্রথমটা পৃথিবী থেকে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। সূর্যের আকারের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৫৪০ গুণ বড়। এ রকম আরও কয়েকটি বড় নক্ষত্র হলো ‘আরএসজিসি১-এফ০১’, ‘এইচডি ২৬৯৫৫১’, ‘সিএম ভেলোরাম’, ‘এইচভি ৮৮৮’ইত্যাদি। এগুলো সবই সূর্য থেকে লাখো আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ও কয়েক শ গুণ বড়।
তবে ইউভি স্কুটি সবচেয়ে বড় নক্ষত্র হলেও এটা কিন্তু সবচেয়ে ভারী নয়। বড় আর ভারী কিন্তু এক জিনিস নয়। একটা ফুটবল লোহার গোলকের (টেনিস বলের মতো ছোট লোহার বল) চেয়ে অনেক বড়। কিন্তু গোলকের আশপাশেও হবে না ফুটবল ওজন। ঠিক তেমনি ইউভি স্কুটি সবচেয়ে বড় নক্ষত্র ঠিকই, কিন্তু সবচেয়ে ভারী হলো ‘আর১৩৬এ১’(R136a1)। আমাদের সূর্যের চেয়ে এর ভর প্রায় ১৭০-২৩০ গুণ বেশি। অনেক ভারী ভারী নক্ষত্রের কথা বলা হলো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।