আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ড ঘিরে দেশটিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ পরিকল্পিত এই হত্যাকাণ্ডের বাঁকে বাঁকে রয়েছে রহস্য। আর নৃশংস এই পরিকল্পনা সাজিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সোনাম। এতে সাহায্য করেছেন পরকীয়া প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা, যিনি আবার তিন বন্ধুকে ‘ভাড়াটে কিলার’ হিসেবে নিয়োগ করেন।
তাদের বিয়ে হওয়ার পাঁচদিন পর রাজ তার তিন শৈশব বন্ধু আনন্দ কুমরি (২৩), আকাশ রাজপুত (১৯) এবং বিশাল সিং চৌহানকে (২২) ইন্দোরের এক ক্যাফেতে ডেকে পাঠান। সেখানে তাদের টাকা দিয়ে রাজাকে খুন করার জন্য প্ররোচিত করেন বলে সূত্রের দাবি।
২০ মে রাজা ও সোনাম হানিমুনের জন্য মেঘালয়ে রওয়ানা দেন। একই সঙ্গে তিন খুনি তাদের পেছন পেছন উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছে যায়। সেদিনই ঘাতকরা গৌহাটিতে পৌঁছে একটি কুড়াল অনলাইনে অর্ডার করে। এরপর তারা শিলংয়ে গিয়ে রাজা ও সোনামের থাকার জায়গার কাছে একটি হোটেলে ওঠে।
২৩ মে সোনাম ফটোশুটের অজুহাতে রাজাকে একটি নির্জন পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যান। ঘাতকেরাও তাদের অনুসরণ করে। সেখানে পৌঁছে সোনাম প্রথমে ক্লান্ত হওয়ার ভান করে স্বামীর পেছনে হাঁটতে থাকেন।
সূত্রের দাবি, নির্জন জায়গায় পৌঁছে তিনি চিৎকার করে বলেন, ওকে মেরে ফেলো। এরপরই রাজাকে হত্যা করা হয়।
সোনামের পরকীয়া প্রেমিক রাজ কুশওয়াহা ঘটনাস্থলে ছিলেন না, তবে শিলং পুলিশ জানায়, পুরো পরিকল্পনা তিনিই করেছিলেন এবং তিনি সোনামের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলেন।
২৩ মে ওই দম্পতির নিখোঁজ হওয়া থেকে তদন্ত শুরু হয়, যা পরিণত হয় হত্যাকাণ্ডের তদন্তে-যখন ২ জুন রাজার মরদেহ একটি গিরিখাদ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে একটি ধারালো অস্ত্রও পাওয়া যায়। ময়নাতদন্ত অনুযায়ী, রাজার মাথায় সামনে ও পেছনে দুটি আঘাত করা হয়েছিল।
ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে অচেতন অবস্থায় সোনামকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য গাজিপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে তিনি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
তিন অভিযুক্ত ঘাতককেও রাতারাতি চালানো অভিযানে গ্রেফতার করা হয়।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আইন-শৃঙ্খলা) অমিতাভ ইয়াশ বলেন, সোনাম দাবি করেছেন, তাকে মাদক খাইয়ে গাজিপুরে আনা হয়েছিল যেন তিনি নিজেকে ভিকটিম হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন।
তবে পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, সোনাম একজন দুর্বল পরিকল্পনাকারী। পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না। তিনি ভেবেছিলেন ভিকটিম সেজে পার পেয়ে যাবেন, কিন্তু ব্যর্থ হন।
মেঘালয় পুলিশ বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে এবং প্রয়োজনে অন্যান্য রাজ্যের পুলিশ সহায়তা করবে বলেও জানানো হয়েছে।
Get the latest News first— Follow us on Zoombangla Google News, Zoombangla X(Twitter) , Zoombangla Facebook, Zoombangla Telegram and subscribe to our Zoombangla Youtube Channel.