রিয়াজুল ইসলাম : বিশেষ পদ্ধতি কোকোপিটের সাহায্যে মিডিয়া দ্বারা তৈরী ভাইরাস মুক্ত সব মৌসুমের সবজি চারা উৎপাদন করে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন ইয়াসিন আরাফাত।
এখন গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায়। জমি প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষকরা। আর এই গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষকে সামনে রেখে বিশেষ পদ্ধতিতে মাটি ছাড়াই ৬ শতক জমিতে সবজির চারা উৎপন্ন করছেন দিনাজপুরের সুন্দরবন ইউপির রানীগঞ্জ বেলবাড়ির ইয়াসিন আরাফাত। তবে সব মৌসুমের আগেই তিনি মাটি ছাড়াই সবজির চারা উৎপাদন এবং বিক্রি করতে গড়ে তুলেছেন সবজি নার্সারী।
বর্তমানে কৃষকের চাহিদা অনুযায়ী তিনি এক হাজার ট্রে তে এক লাখ টমেটো চারা উৎপাদন করছেন। কিছুদিনের মধ্যে এসব চারা কৃষকরা নিয়ে যাবেন। কারণ ফাল্গুনের মধ্যে এসব টমেটো চারা রোপন করতে হবে।
কোকোপিট একটি উচ্চ বাফার ক্ষমতাসম্পন্ন জৈব পদার্থ যা মাটির গুণাগুণ বজায় রাখতে বিশেষভাবে সহায়তা করে থাকে। কোকোপিটের পিএইচ সবসময় ৫.৫ থেকে ৭ থাকে যা সুস্থ উদ্ভিদ তৈরিতে এবং খুব সহজেই উন্নতমানের গাছপালা তৈরিতে সাহায্য করে এবং এর ফলে অনেক বেশি পরিমাণে ফসল সংগ্রহ করা যায়। কোকোপিট দিয়ে যে কোনো প্রকার চারা তৈরি বা গাছ লাগানো যেতে পারে। নির্দিষ্ট কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই।আধুনিক গ্রিন হাউসে কোকোপিটকে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা হয়।
ইয়াসিন আরাফাত জানান, রানীগঞ্জ বেলবাড়িতে তার সবজী নার্সারীতে বিশেষ পদ্ধতিতে কোকপিটের সাহায্যে মিডিয়া দ্বারা তৈরী ভাইরাস মুক্ত সব মৌসুমের সবজী চারা তৈরী এবং বিক্রি করা হয়। এই চারা তৈরীতে ট্রে ব্যবহার করা হয়। ক্রমবর্ধমান হাইড্রোপোনিক উপায়ে সবজি চাষের জন্য কোকোপিট ব্যবহার করা হয় যেন কোনোভাবেই গাছ বা চারা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। কোকোপিট উদ্ভিদের শিকড় উন্নয়নের জন্য একটি চমৎকার স্তর এবং গাছ বা চারা রোপণ করার সময় কোনো এজেন্ট প্রয়োজন হলে জৈব সারের সাথে কোকোপিটের সংমিশ্রণে একটি গ্রোয়ার মিডিয়া তৈরি করে সরাসরি চারা তৈরি করা যেতে পারে। কোকোপিট মাটির তুলনায় অনেক হালকা এবং টবে ব্যবহারের সময় খুব সহজেই কোকোপিটের ভিতর বাতাস চলাচল করতে পারে, যার ফলে গাছ বেশি বেশি অক্সিজেন নিতে পারে। কোকোপিট শোষক সময়কাল অনেক। ফলে এটা গাছে ধীরে ধীরে শোষিত হয়।
তিনি আরও জানান, প্রথমে চারা তৈরীর জন্য ৬০০টি ট্রে, কোকোপিট (নারিকেলের ছোবলার পচানো গুড়া) শুরু করেন। একবারেই এসব ক্রয় করতে হয়েছে। তবে চারা বিক্রির পর কোকোপিট ক্রয় করতে হয়। কোকোপিট ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একই ট্রে এবং নেট কয়েক বছর চলে যায়, তাই বার বার কিনতে হয় না। এ পর্যন্ত ১০০ জন কৃষক তার কাছে চারা কিনেছেন। এখন বেগুন, মরিচ, পেঁপে, টমেটো, ফুলকপিসহ নানা ধরনের সবজির চারা উৎপাদন করাও হয। মৌসুমের আগেই চারা উৎপন্ন করে বিক্রি করা যায়। এতে ভালো দাম পাওয়া যায়। অনেক কৃষক আগাম সবজির চারা কেনার জন্য অর্ডার দিচ্ছে। চাহিদাও বাড়ছে। কৃষকরাও আগাম এসব চারা নিয়ে ব্যাপক লাভবানও হচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, প্রতিটি টমেটো চারা দেড় টাকা দরে কৃষকের কাছে বিক্রি করেন এবং তার প্রতিটি চারায় খরচ পড়েছে ১ টাকা। প্রতি ট্রেতে একশ চারা থাকে। প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা লাভ হয়। এ ছাড়াও তার নার্সারীতে আম, লিচুসহ বিভিন্ন সবজীর চারা উৎপন্ন ও বিক্রি করা হয়। সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।