জুমবাংলা ডেস্ক : কম গতির কারণে ঢাকা উড়ালসড়ক বা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি নেই। দুর্ঘটনার ঝুঁকির কারণে বাদ পড়েছে মোটরসাইকেল এবং বাইসাইকেল।
এছাড়া, পথচারীর হাঁটাচলাও নিষিদ্ধ উড়ালসড়কে। অদূর ভবিষ্যতে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সম্ভাবনাও নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ঢাকা উড়ালসড়ক গত শনিবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকাল ছয়টা থেকে পুরোদমে সাধারণ যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
কাওলা থেকে উড়ালসড়কটি যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ীর কুতুবখালী পর্যন্ত। সর্বমোট দূরত্ব ১৯.৭৩ কিলোমিটার। কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার। বাকি অংশ আগামী বছর জুনে চালুর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সরকার।
সেতু বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিতে সিএনজিটচালিত অটোরিকশাসহ তিন চাকার এবং মোটরসাইকেল, বাইসাইকেলসহ দুই চাকার যানবাহন চলাচলের সুযোগ রাখা হয়নি।
সেতু বিভাগ এর মূল কারণ হিসাবে জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী দ্রুতগতির উড়ালসড়কে কম গতির যানবাহন চলতে দেওয়া হয় না। এই রীতি মেনে ঢাকা উড়ালসড়কেও সুযোগটি রাখা হয়নি। ঢাকা উড়ালসড়কে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলতে পারবে ধরেই নকশা করা হয়েছে।
সরকার অভ্যস্ততা তৈরির জন্য প্রথম দিকে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে ফাঁকা রাস্তায় সরকার নির্ধারিত গতিসীমা মানানো কঠিন। রোববার প্রথম দিন অনেকেই তা মানেননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সেতু বিভাগ বলছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। অটোরিকশা চলতে দেওয়া হলে অন্যান্য দ্রুতগতির যানবাহনের চলাচল ব্যাহত হবে।
এ ছাড়া এই উড়ালসড়ক দেশের সবচেয়ে উঁচু উড়ালসড়ক। আগে নির্মাণ করা উড়ালসড়ক, মেট্রোরেলের লাইনের ওপর দিয়ে গেছে এটি। কিছু কিছু স্থানে মাটি থেকে সর্বোচ্চ ২২ মিটার পর্যন্ত উঁচু দিয়ে গেছে। অটোরিকশা ওঠার সময় গতি হারাতে পারে, ইঞ্জিন বিকল হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে অন্যান্য যানবাহনের চলাচল ব্যাহত হবে।
অবশ্য কেউ কেউ বলছেন, পণ্যবাহী ট্রাকের গতিও কম। বিকল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে এ ক্ষেত্রে যুক্তি হচ্ছে—পণ্যবাহী যানবাহনের টোল বেশি। আর পণ্যবাহী যানগুলো ওভারটেক করবে না। একটা লেন ধরে চলবে। ওই লেনটা মোটরসাইকেল বা অটোরিকশার দখলে থাকুক, তা চায় না বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। বরং পণ্যবাহী যানবাহন তাদের আয় বাড়াবে। এ ছাড়া পণ্যবাহী যানবাহন সহজে ওপর দিয়ে পার করে দেওয়া উড়ালসড়কের অন্যতম লক্ষ্য।
সেতু বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভবিষ্যতে যদি কোনো যানবাহন যোগ করার প্রয়োজন পড়ে, তা সেতু বিভাগ বা বিনিয়োগকারী এককভাবে পারবে না। দুই পক্ষ বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তবে এখন এই সম্ভাবনা নেই।
বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি অনুসারে, উড়ালসড়ক দিয়ে চার ক্যাটাগরি বা শ্রেণির যানবাহন চলতে পারবে। এর মধ্যে শ্রেণি-১–এ সব ধরনের গাড়ি, মাইক্রোবাস ও তিন টনের কম হালকা ট্রাক রয়েছে। শ্রেণি-২–এ আছে ছয় চাকা পর্যন্ত ট্রাক। শ্রেণি-৩–এ ৬ চাকার বেশি সব ধরনের ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানসহ মালবাহী যান। শ্রেণি-৪–এ সব ধরনের বাস-মিনিবাস রয়েছে।
সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, নিরাপদ সড়কের কথা বিবেচনায় নিয়ে দুই ও তিন চাকার যানবাহন চলছে না। বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তিতেও এসব যানবাহন চলার বিষয়টি নেই।
তিনি বলেন, উড়ালসড়ক দিয়ে যত যানবাহন চলবে, তা নিচের সড়কে জায়গা বাড়িয়ে দেবে। ফলে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিচে দিয়ে চললেও যানজট কম হবে। দুই ও তিন চাকার যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি এখন বিবেচনায় নেই বলে তিনি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।