জুমবাংলা ডেস্ক : ভিমরুলের কামড় একটি বিপজ্জনক এবং তীব্র ব্যথাযুক্ত ঘটনা হতে পারে। ভিমরুলের বিষে থাকা রাসায়নিক উপাদানগুলো ত্বকে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, যার ফলে আক্রান্ত স্থান ফুলে ওঠে, ব্যথা হয় এমনকি গুরুতর ক্ষেত্রে শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়। ভিমরুলের কামড় মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ভিমরুলের কামড়ে বিষ প্রবেশ করার পর তা ত্বকের কোষগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বিষের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের এনজাইম এবং প্রোটিন থাকে, যা ত্বকে প্রদাহ, ব্যথা এবং লালচে রঙের ফোলা সৃষ্টি করে। বিষের কারণে রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় এবং ক্ষতস্থানে রক্ত প্রবাহে সমস্যা দেখা দেয়।
ভিমরুলের কামড় সাধারণত খুবই তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে, যা তুলনামূলক অন্যান্য পোকামাকড়ের কামড়ের চেয়ে বেশি। ভিমরুলের বিষে থাকা অ্যাসিডিক উপাদানগুলো নার্ভ সিস্টেমে তীব্র সঙ্কেত প্রেরণ করে, যার ফলে ব্যথা অনেক বেশি অনুভূত হয়।
ব্যথা সাধারণত কয়েক ঘণ্টা ধরে থাকে, তবে কারো কারো ক্ষেত্রে তা কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
এলার্জির প্রতিক্রিয়া
ভিমরুলের কামড়ে এলার্জির প্রতিক্রিয়া খুবই সাধারণ একটি ঘটনা। কারো শরীর যদি কামড়ের বিষের প্রতি সংবেদনশীল হয়, তবে এলার্জির প্রতিক্রিয়ায় ত্বকে চুলকানি, ফোলা, শ্বাসকষ্ট এবং বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে। গুরুতর এলার্জির ক্ষেত্রে এনাফাইল্যাক্সিস শকের ঝুঁকিও থাকে, যা জীবনঘাতী হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট ও শারীরিক দুর্বলতা
গুরুতর প্রতিক্রিয়ায় ভিমরুলের কামড় শরীরের বিভিন্ন অংশে অস্বাভাবিক সাড়া তৈরি করতে পারে। এর ফলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে মুখমণ্ডলে কামড় খেলে শ্বাসনালিতে ফোলাভাব সৃষ্টি হতে পারে, যা স্বাভাবিক শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধা দেয়।
বারবার কামড়ালে ঝুঁকি
ভিমরুল সাধারণত একাধিকবার কামড় দিতে সক্ষম এবং দলবদ্ধভাবে আক্রমণ করে। যদি একই ব্যক্তি একাধিকবার ভিমরুলের কামড়ে আক্রান্ত হয়, তাহলে তার শরীরে বিষের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে প্রতিক্রিয়া আরো জটিল এবং মারাত্মক হতে পারে।
দ্রুত করণীয়
ভিমরুলের কামড়ে আক্রান্ত হলে প্রথমে ওই স্থানটি ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলা উচিত। এরপর বরফ বা ঠাণ্ডা কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে রাখতে হবে, যাতে ফোলাভাব কমে। ব্যথা কমানোর জন্য পেইন কিলার নেওয়া যেতে পারে এবং এলার্জির প্রতিক্রিয়া থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
ভিমরুল থেকে বাঁচার জন্য ঘরবাড়িতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখা উচিত। বাগান, গাছ বা ফাঁকা জায়গায় চলাচল করার সময় সতর্ক থাকা উচিত এবং ঘরের আশপাশে ভিমরুলের বাসা দেখা গেলে পেশাদারদের সহায়তায় তা সরিয়ে ফেলা ভালো।
কাদের বেশি সতর্ক থাকা উচিত
যাদের ত্বক এলার্জি প্রবণ বা আগে কখনো ভিমরুলের কামড়ে সমস্যা হয়েছে, তাদের জন্য এই কামড় বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। বয়স্ক, শিশু এবং যারা সাধারণত শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের এই কামড়ে আক্রান্ত হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।
চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা
সাধারণত ভিমরুলের কামড় ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সাধারণ চিকিৎসায় সেরে ওঠে। তবে গুরুতর প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে হাসপাতালের অ্যান্টি-হিস্টামিন, স্টেরয়েড ইনজেকশন বা ইনটেনসিভ কেয়ার দরকার হতে পারে।
সতর্ক ও সচেতন থাকার প্রয়োজনীয়তা
ভিমরুলের কামড়ের ক্ষেত্রে নিজে সতর্ক থাকাই একমাত্র প্রতিরোধের উপায়। যেখানে ভিমরুলের বাসা আছে সেখান থেকে দূরে থাকা এবং দলে দলে চলাচল করলে নিজেকে এবং আশপাশের মানুষদের ভিমরুলের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
সতর্কতা ও সচেতনতা বজায় রেখে চললে ভিমরুলের কামড়ের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। কামড়ের পর দ্রুত ব্যবস্থা নিলে ঝুঁকিও কমানো যায়। তবে কখনো গুরুতর প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে বিলম্ব না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।